কক্সবাজার জেলা বিএনপি ও জেলা যুবলীগের পাল্টাপাল্টি আহুত সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশংকায় উক্ত স্থানে সব ধরনের সভা-সমাবেশ বন্ধে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শান্তি বজায় রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে ১৪৪ ধারা ভেঙে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি) সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনের সড়কে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান বলেন, সরকার মানুষের সব গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জনসভাস্থলে যুবলীগের কর্মসূচি দেওয়া তাদের হীনমানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। জনসভা করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল করছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলা থেকে পথসভায় আসার পথে বাধাপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীরা উপজেলা শহরেও বিক্ষোভ মিছিল করছে।
জানা যায়, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আজ (৩ জানুয়ারি) মহাসমাবেশ আহবান করে বিএনপি। মহাসমাবেশ সফল করতে সপ্তাহ ব্যাপী সভা, সমাবেশ করে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। জনসভাকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। গত কয়েকদিন ধরে সরগরম দেখা যায় জেলা বিএনপির কার্যালয়। ব্যানার পোস্টারে পুরোজেলা শহর ছেয়ে ফেলা হয়। মহাসমাবেশকে জনসমুদ্রে রুপ দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ইতিহাসে বিজয়ের মাইলফলক হিসেবে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ পালন উপলক্ষ্যে হঠাৎ করে সমাবেশের ডাক দিয়েছে যুবলীগ।পাল্টাপাল্টি সমাবেশ আহবানকে কেন্দ্র করে পুরো শহর জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষের রণপ্রস্তুতি থামাতে রাতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ান স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে অনেকবার গেছি অনুমতির জন্য। প্রথমে আমাদের বাহারছড়ার গোলচত্তর মাঠে মৌখিক ভাবে অনুমতি দিয়েছিলো। পরে তা বাতিল করে প্রশাসন। এরপর শহীদ স্মরণি সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে জনসভার করার তবুও আমরা জনসভা করে যাবো। এবারের মহাসমাবেশ হবে জনসমুদ্র। অন্যদিকে, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর বলছেন, ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ পালন হিসেবে আমরা শহীদ স্মরণীতেই সমাবেশ করবো। ইতিমধ্যে পুরো শহরে মাইকিং করে প্রচার চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত কোন সিদ্ধান্ত দেয়া হয়, তাহলে সেটি আমরা মানবো। যেহেতু সরকার দলীয় সংগঠনের দায়িত্বে আছি সেক্ষেত্রে প্রশাসনের যেকোন সিদ্ধান্ত মানতে হবে। যুবলীগের দাবি, জনসমাবেশ করার ক্ষেত্রে নির্মাণাধীন শহীদ স্মরণীর সড়কই অবৈধ ভাবে ব্যবহার করছেন বিএনপি। সড়কের উপর গাছের টেবিল বসিয়ে বানানো হয়েছে বিশাল মঞ্চ। যদিও এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। একটি নির্মাণাধীন সড়ক কখনো এভাবে ব্যবহার করতে পারে না।