দেশেই উৎপাদন হচ্ছে সুঁচবিহীন করোনার টিকা

নাকের মাধ্যমে প্রয়োগের সুঁচবিহীন করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদন করতে যাচ্ছে দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস। সঙ্গে থাকবে ব্রিটিশ বায়োমেডিকেল কোম্পানি ভিরাকর্প। অত্যাধুনিক ইন্ট্রা-ন্যাজাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি টিকাটি নাকের স্প্রের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করানো যাবে।

শনিবার টিকা তৈরির বিষয়ে যুক্তরাজ্যের কোম্পানিটির সঙ্গে চুক্তি সই হওয়ার কথা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ইনসেপটা।

শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট ও ভিরাকর্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুনিরের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে এই টিকা তৈরি হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে টিকাটি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এই টিকা বাজারে আসতে পারে বলে জানিয়েছে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই টিকা করোনা থেকে সুরক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য এমন অনেক সুবিধাও দেবে-যেগুলো বর্তমানে বাজারে থাকা অন্যান্য টিকা দিতে পারছে না। শীতল রাখার প্রচলিত পরিবহন ব্যবহার করেই টিকাটি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া যাবে। বাড়তি কিছু দরকার হবে না এ কাজে।

ইনসেপটা ভ্যাকসিন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আব্দুল মুক্তাদির বলেন, এই টিকা বছরে একক ডোজ ফরম্যাটে ১৮০ মিলিয়ন বা মাল্টি-ডোজ ফরম্যাটে ১ বিলিয়ন ডোজ নাসাল টিকা উৎপাদন করা যাবে।

আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ইনসেপটা সবসময় নতুন টিকা পদ্ধতি এবং উৎপাদন প্রযুক্তি তৈরি ও বিকাশের উপায় খোঁজে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের পাশাপাশি প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীগুলোকে টিকাদানের ক্ষেত্রেও একটি দারুণ সমাধান হবে টিকাদানের এই নতুন পদ্ধতি। এই সহযোগিতামূলক কার্যক্রম একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

এ প্রসঙ্গে ভিরাকর্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুনির বলেন, সহজে পরিবহন করা যায় এবং নাকের মাধ্যমে দেওয়া যায়-এমন একটি টিকা টিকাদান কর্মসূচির জন্য ভারী অবকাঠামো ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেবে। টিকা যেন বিশ্বের সবচেয়ে প্রত্যন্ত এলাকার সম্প্রদায়ের কাছেও পৌঁছাতে পারে, তা নিশ্চিত করতেও সাহায্য করবে এটি।

এই বিজ্ঞানী বলেন, ইনসেপটার সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের করোনার টিকা বিকাশের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। টিকাটি করোনার ভ্যারিয়েন্টের প্রকৃতি থেকে স্বতন্ত্রভাবে সুরক্ষা দেবে এবং সংক্রমণ আটকে দেবে।

এর আগে দেশে সুইডেনের কেরোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ন্যাজাল স্প্রে টিকার ট্রায়াল ও উৎপাদনের জন্য গত আগস্টে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল।

এখন পর্যন্ত কোনো দেশে করোনাভাইরাসের কোনো ন্যাজাল টিকা অনুমোদন পায়নি। ভারত বায়োটেক (ভারত), কোডাজেনিক্স (যুক্তরাষ্ট্র), হংকং বিশ্ববিদ্যালয় (চীন), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (এনআইএইচ) ন্যাজাল টিকার বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ করেছে।

সূত্র : ঢাকা টাইমস