আখের রসকে প্রাকৃতিক শক্তিবর্ধক পানীয় বলা হয়। তবে শুধুমাত্র ক্লান্তি দূর করতেই নয়, ত্বকের জন্য এবং শরীরের জন্যও যথেষ্ট উপকারী হলো আখের রস। আখের রস এমন একটি পানীয় যা ১০০ শতাংশ প্রাকৃতিক এবং এতে বিন্দুমাত্র ক্ষতিকারক উপাদান নেই।
পানিশূন্যতা দূরীকরণে ও জন্ডিস রোগের মহৌষধ হিসেবেও কাজ করে বহুবর্ষজীবী এ উদ্ভিদটি। মোটামুটি সব ঋতুতেই পাওয়া যায় আখ। এতে রয়েছে মিনারেল, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আখের রসে দেহের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় নিমেষে।
২৫০-৩০০ মিলিলিটার আখের রসে সাধারণত ১১১ ক্যালরি থাকে। এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট থাকে ২৭ গ্রাম, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে ০.২৭ গ্রাম।
একাধিক গবষণায় দেখা গেছে প্রতিদিনের ডায়েটে আখের রসকে জায়গা করে দিলে একাধিক রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। কারণ আজকের এ সময়ে অসংখ্যা রোগ আমাদের ঘিরে ধরেছে, তার প্রায় সবকটির প্রকোপ কমাতেই আখের রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম,ফসফরাস, আয়রন, জিঙ্ক, পটাশিয়াম এবং আরও সব উপকারি উপাদান নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে।
শরীরে পানির অভাব দূর করতে সাহায্য করে আখের রস। লিভারের রোগ দূর করতেও সাহায্য করে আখের রস।
আখের রসে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ও ম্য়াঙ্গানিজ থাকায় দেহে ক্যানসারের জন্মদাতা কোষগুলো থাকতে পারে না। বিশেষ করে প্রস্টেট ও ব্রেস্ট ক্যানসার কোষ শরীর থেকে দূর করতে সাহায্য করে আখের রস।
হজমশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে আখের রস। পাকস্থলির সংক্রমণ দূর করতেও সাহায্য করে আখের রস। দাঁত, হাড় এবং শরীরের কঙ্কালতন্ত্র ঠিক রাখতেও সাহায্য করে আখের রস। পেশির শক্তি বাড়ায়: আখের রস পেশির শক্তি বজায় রাখতে দেহে প্রাকৃতিক গ্লুকোজ সরবরাহ করে।
আখের রস লো গ্লাইসেমিক ধরনের খাবার হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ শক্তিবর্ধক পানীয় হিসেবে পরিচতি। তবে এটি অবশ্যই পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত।
আখের রসে উপস্থিত আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড বা এএএচএস ত্বকের মৃত কোষ অপসারণের কাজ করে। এর ফরে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। এছাড়া ব্রণের দাগ দূর করতে সারাসরি আক্রান্তস্থলে আখের রস লাগাতে পারেন। আখের রসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় এটি পানি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে। ফলে রক্তশূন্যতা দূর হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে আখের রসে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনের মতো সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, কিডনি ফাংশনকে ঠিক রাখতেও আখের রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।