জুমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহের শুক্রবার এই নামাজের বিধান আল্লাহ্ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য দিয়েছেন। শুক্রবার সকাল থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদ-এলাকার সবাই একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করে। এটা মুসলমানদের জন্য সাপ্তাহিক মিলনমেলা। অন্যান্য কাজ-কর্ম সাময়িক বন্ধ রেখে এই মিলনমেলায় উপস্থিত হয়ে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য আল্লাহ তাআলা কঠিন আদেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ্ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন (জুমার) নামাযের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম, যদি তোমরা বুঝো।
’ (সুরা জুমুআ, আয়াত :০৯)
একদিকে আল্লাহ তাআলা জুমার নামাজে উপস্থিত হওয়ার কঠিন নির্দেশ দিয়েছেন, অন্যদিকে জুমার নামাজ আদায় করার বিপুল ফযিলত রেখেছেন। যে যতো আগে আসবে, সে ততোবেশি লাভবান হবে।
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘শুক্রবার দিন মসজিদের প্রতিটি দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করে এবং (জুমার নামাজের) আগমনকারীদের নাম ক্রমানূসারে লিপিবদ্ধ করতে থাকে।
অতঃপর ইমাম যখন (মিম্বরে) বসেন, তারা লেখাগুলো গুটিয়ে নেয় এবং যিক্র (খুতবা) শোনার জন্য চলে আসে। মসজিদে যে আগে আসে, তার উদাহরণ সে ব্যাক্তির মত যে একটি উটনী কোরবানি করেছে। তার পরবর্তীজনের দৃষ্টান্ত তার মত যে একটি গাভী কোরবানি করেছে। তার পরবর্তীজনের দৃষ্টান্ত তার মত যে একটি ভেড়া কোরবানি করেছে এবং তার পরবর্তীজনের দৃষ্টান্ত তার মত যে একটি মুরগি দান করেছে। পরবর্তীজনের দৃষ্টান্ত তার মত যে একটি ডিম দান করেছে। ’ (মুসলিম, হাদিস নং: ২০২১)
শুধু তাই নয়, জুমার নামাজ জন্য মসজিদের দিকে অগ্রসর হলে, প্রতি কদমে এক বছর নফল রোযা ও নামায পড়ার সওয়াব পাওয়া যায় এবং জুমার নামাজ আদায় করলে দশ দিনের গোনাহ মাফ হয়।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সকাল সকাল গোসল করল এবং গোসল করাল, তারপর ইমামের কাছে গিয়ে বসে চুপ করে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, প্রত্যেক কদমের বিনিময়ে সে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব পাবে। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ৪৯৮)
আল্লাহর রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘জুমার দিনে যে ব্যক্তি গোসল করে জুমার নামাজের জন্য যায় এবং সামর্থ্য অনুযায়ী নামাজ আদায় করে, এরপর ইমাম খুতবা শেষ করা পর্যন্ত নীরব থাকে। এরপর ইমামের সঙ্গে নামাজ আদায় করে। তবে তার এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত আরও তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ’ (মুসলিম, হাদিস নং : ২০২৪)
বস্তুত জুমার নামাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময়। আমরা অনেকেই জুমার নামাজকে অবহেলা করে থাকি। অযথা ও বিনা কারণে কখনও জুমার নামাজ পরিত্যাগ করা যায় না।
এ ব্যাপারে শরিয়তে কঠিন সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা করে তিন জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তাআলা তার হৃদয় মোহরাঙ্কিত করে দেন। ’ (তিরমিজি হাদিস নং : ৫০২)
আল্লাহ তাআলা আমাদের যথাযথভাবে জুমর নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।