ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে আম খাবেন

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের মিষ্টি খাবার খাওয়া বারণ। মিষ্টি ফলও পরিমিত খেতে হয়। তাই বলে কি ডায়াবেটিক রোগীরা আম খাবেন না? যদিও আম রক্তের সুগার বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু নিয়ম মেনে আম খাওয়া যেতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীর আম খাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিমাণ। আমের পরিমাণের ওপর রোগীর রক্তের শর্করা অনেকটা নির্ভর করবে। প্রতিদিন ছোট টুকরো করে কাটা হাফ কাপ পরিমাণ আম খাওয়া যেতে পারে। একবারে অনেক বেশি পরিমাণ খাওয়া যাবে না।

ডায়াটিশিয়ানদের মতে নিজের খাদ্যাভাসকে একটু পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখলে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও খেতে পারবেন আম। আমে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম ইত্যাদি।

এছাড়া আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই রোগ প্রতিরোধেও এর বড় ভূমিকা রয়েছে। এর পাশাপাশি আমে রয়েছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক। যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে।

আপনি যদি সারাদিনে গৃহীত ক্যালোরির উপর নজর রাখতে পারেন। রক্তে সুগারের মাত্রা যদি খুব বেশি না থাকে, সারাদিন দৌড়ঝাঁপের মধ্যে দিয়ে কাটান, তাহলে অনায়াসে আম খেতে পারবেন আপনি। যদি খাবারের তালিকায় আম রাখেন তাহলে সেদিন অন্যান্য খাবার থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিতে হবে।

যদি ভাবে আজ আপনি একটি গোটা আম খাবেন, তাহলে ওইদিন রুটি, ভাত কম খাবেন। খাবারের সঙ্গে আম খাবেন না। ব্রেকফাস্টে অথবা বিকেলের দিকে আম খেতে পারেন। এদিন, পারলে সবজির সঙ্গে ওটসের উপমা, ডালিয়া জাতীয় খাবার খান। পাশাপাশি যে ওষুধ আপনি খান, সেটি বাদ দেবেন না। তাহলেই মাঝে মাঝে আপনিও সুগারের রোগী হওয়া সত্ত্বেও আম খেতে পারবেন।

ডায়বেটিস রোগীরা আমের সঙ্গে একটু প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন- লো ফ্যাট দুধ, বাদাম বা সিদ্ধ ডিম যুক্ত করতে পারেন। যা আপনার ব্লাড গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। অনেকে চাইলে কাঁচা আমও খেতে পারেন। তবে বাড়তি চিনি যোগ করা যাবে না।

আমের জুস বা স্মুদি না খেয়ে ফ্রেস আম খাওয়ার দিকে গুরুত্ব দিন। জুস বা স্মুদিতে খাদ্য আঁশের ঘাটতি থাকে। অন্যদিকে পাঁকা আম থেকে পাওয়া যাবে খাদ্য আঁশ যা ডায়বেটিক রোগীর জন্য উপকারি। অন্যান্য সাইট্রাস ফলের সঙ্গে মিশিয়ে ফ্রুট সালাদ করেও খেলে মন্দ হয় না।

গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার গ্রহণের সময় ঠিক রেখে, সঠিক পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেলে এবং শর্করার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আম খেলে তা ডায়বেটিক রোগীর জন্য অনেক ক্ষেত্রেই উপকারি।

আমে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকার কারণে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে। হার্ট ভালো রাখে। খাবার পরিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম, পানি, খাদ্য আঁশ ও অন্যান্য উপাদান থাকার কারণে এটি আমাদের পরিপাকতন্ত্রের জন্যও উপকারি।

যদি খুব বেশি মাত্রায় সুগারে আক্রান্ত হন, তাহলে অবশ্যই আম খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। তবে করোনা সেরে যাওয়ার পর সুগার লেভেল কন্ট্রোলে থাকলে তারা সপ্তাহে একফালি অর্থাৎ ছোট একটা আম খেতে পারেন। এতে করে অতিমারীর সময়ে, মনও ভাল থাকবে।