বাংলাদেশের কাছে হাত পাততে হতে পারে পাকিস্তানকে!

সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এই ধস যদি অব্যাহত থাকে এবং একইসাথে বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অগ্রগতি যদি বহাল থাকে তাহলে অচিরেই বাংলাদেশের কাছে দেশটিকে হাত পাততে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের পাকিস্তান প্রোগ্রামের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান।

২৪ মে প্রকাশিত ‘এইড ফ্রম বাংলাদেশ’ শিরোনামের এক প্রবন্ধে আবিদ হাসান লিখেছেন, ২০ বছর আগে এমনটা চিন্তাও করা যেতো না যে, বাংলাদেশের জিডিপি পাকিস্তানের দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির অগ্রগতি এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে।

আবিদ হাসান পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন, এছাড়াও ফেডারেল বোর্ড অব রেভেনিউ ট্যাক্স রিফর্মস গ্রুপের সদস্যও ছিলেন তিনি। বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তানের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে চাইলে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলকে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মিলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো এবং ঋণের পরিমাণ কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

পাকিস্তানের অর্থনেতিক ভঙ্গুরতার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানের বর্তমান এবং আগের সরকারগুলো সারা বিশ্বের কাছে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরেছে। অর্থনীতির এই অবস্থা পাকিস্তানের নিজের দোষেই হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হয়তো আইএমএফ কিংবা বিশ্ব ব্যাংকের কিছুটা দোষ আছে।

তবে আসল কথা হলো খারাপ অর্থনীতির জন্য মূলত পাকিস্তানই দায়ী। আবিদ হাসান আরও বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ধর্ম, কর্মক্ষেত্রে নৈতিকতার অভাব, অগোছালো রাজনীতি, দুর্বল জনপ্রশাসন ইত্যাদি বিষয়ে মিল থাকলেও বাংলাদেশ অনেক ভালো করছে যা একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে। মাত্র দুই দশকে অর্থনীতির মূল নির্দেশকগুলোতে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে বাংলাদেশ একটি চমৎকার গল্পে পরিণত হলো, আর পাকিস্তান পরিণত হলো বিশৃঙ্খল কাহিনিতে? আবিদ হাসান মনে করেন, এটা তাদের আত্মসম্মানে আঘাত হানবে, তবুও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে, ঋণ কমাতে, বাংলাদেশের কাছে হাত পাতার সম্ভাবনা দূর করতে হলেও এ বিষয়ে বাংলাদেশকেই অনুসরণ করতে হবে পাকিস্তানের।