শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর তাণ্ডবে তছনছ হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলা। দুই জেলায় ৬৬টি বাঁধ ভেঙে গেছে। এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে ৫১টি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৫টি বাঁধ ভেঙেছে। বুধবার (২৬ মে) সকালে প্রথমে ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হানে ইয়াস। পারাদ্বীপ এবং সাগরের মাঝখানে ধামড়ার উত্তরে এবং বালাসোরের দক্ষিণ অংশ দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে ঘূর্ণিঝড়টি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার সকাল থেকেই লণ্ডভণ্ড পশ্চিমবঙ্গের দিঘা শহর। সমুদ্রের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত হয়েছে মন্দারমনি, তাজপুরও। তাই সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা সম্পূর্ণ খালি করতে কোমরবেঁধে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। উদ্ধারকাজের জন্য ইতোমধ্যে রাজ্যটির সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দিঘার এমন ভয়াল রূপ আগে কখনও দেখেননি তারা। প্রবল জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে তীব্র গতিতে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে অবিরাম বৃষ্টি। পানির তোড়ে আশপাশের দোকানগুলো ভেসে যায়। ডুবে যায় রাস্তার ওপর দাঁড় করানো মোটরবাইক ও গাড়ি।
সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর জিনিসপত্র উদ্ধারে সাহায্য করতে দেখা যায় তাদের। এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের কলকাতা কার্যালয় বলেছে, ঘূর্ণিঝড়টি ছয় ঘণ্টা ধরে ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে হলদিয়াতেও। হলদি নদীতে জলোচ্ছ্বাসের জেরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে হলদিয়ার শিল্পাঞ্চলে। বাঁধ ভেঙে নদী তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢোকার আশঙ্কায় দোকানের শাটার বেঁধে রাখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ জানান, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সব মিলিয়ে ৫১টি বাঁধ ভেঙেছে এবং পূর্ব মেদিনীপুর থেকে এখনও পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৮ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে। মমতার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, উপকূলবর্তী এলাকায় ৭০ কিলোমিটার নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বহু বাঁধ ভেঙেছে। নন্দীগ্রামেও জল ঢুকেছে। এই পরিস্থিতেও দিশা না হারিয়ে শক্ত হাতে পরিস্থিতি সামলানোর বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।