জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তিনি। তার সুনাম পুরো জগত জোড়া। সংগীত জগতের এক উজ্জ্বল তারকা নেহা কক্কর।ভারতীয় এই গায়িকা মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠেছেন শুধু নিজে’র গায়কী দিয়ে।
২০০৬ সাল থেকে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। এরপর থেকে আর তাকে পিছনে ফি’রে তাকাতে হয়নি।একের পর এক মিউজিক ভিডিও ও প্লেব্যাক করে সেরা সংগীত শিল্পীদের কাতারে নিজে’র নাম উঠিয়েছেন।
আর পাঁচটা সাধারণ পরিবারেই বেড়ে ওঠেন নেহা। তার ছোটবেলা কে’টেছে এক কা’মড়ার জীর্ণ এক ভাড়া বাড়িতে। জনপ্রিয় এই গায়িকা তার অতীত জীবনকে কখনো লুকিয়ে রাখেননি। আর তাই তো আজ তার সুদিনের সময়ও সেই এক কাম’রার ভাড়া বাড়িতে গিয়ে ছবি তুলে নিজ ইনস্টাগ্রামে পোস্ট ক’রেছেন। তার পাশেই আবার নিজে’র কেনা রাজমহলের ছবি দিয়েছেন। তার ক্যারিয়ারের ১৪ বছরের পরিবর্তন তিনি বিশ্ববাসীর স’ঙ্গে শেয়ার ক’রেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জীবনের বিভিন্ন গল্প নানা সময়ে ভাইরাল হয়েছে নেহার। এবার ভাইরাল নেহার নতুন বাড়ির ছবি। স’ম্প্রতি ঋষিকেশে একটি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন নেহা কক্কর। এই ঋষিকেশেই ছিল তার জীর্ণ এক কা’মড়ার বাড়ি। সেখান থেকে হাজারো লড়াই করে তিনি আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। আর সেই লড়াইয়ের কথা ভক্তদের স’ঙ্গে শে’য়ার ক’রতেই শুক্রবার একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে শে’য়ার ক’রেছেন নেহা। যে ছবির একদিকে সেই পুরনো, ভা’ঙা বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন নেহা। অন্যদিকে নতুন বিলাসবহুল বাংলোর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।
দুইটি ছবি শে’য়ার করে নেহা কক্কর লি’খেছেন, এই বাংলোটি আম’রা কিনেছি ঋষিকেশে। সোয়াইপ করুন ডানদিকে, দেখবেন আগে কোন বাড়িতে থাকতাম। ওই বাড়িটিতেই আমা’র জ’ন্ম। এই বাড়িতে আম’রা থাকতাম একটি মাত্র ঘরে। সেখানে একটি মাত্র টেবিলে মা রান্না ক’রতেন। একটি ঘরেই থাকতাম আম’রা। ঘরটিও আমাদের ছিল না। আম’রা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। আর এখন আম’রা নিজেদের বাড়িটি দেখছি, একই শহরে তবে একটু অন্যভাবে। আমি এমন সময়গুলোতে সত্যি বড় আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি।
নিজে’র পরিবারকে ধন্যবাদ জানিয়ে নেহা লি’খেছেন, আমা’র পরিবারকে ধন্যবাদ জা’নাই। আমা’র পরিবারকে ধন্যবাদ। সনু কক্কর, টনি কক্কর, মা, বাবা, মাতারানিকে ধন্যবাদ জা’নাই। ধন্যবাদ জা’নাই আমা’র সমস্ত ভক্তদের। নেহার স’ঙ্গে যে বলিউড গায়কের প্রেম নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, সেই আদিত্য নারায়ন নেহাকে লিখলেন, নেহা উদাহরণ কীভাবে ক’ঠোর পরিশ্রম, সৌজন্য ও নিজেদের শ’ক্তিতে সাফল্য আসে। অভিনেত্রী রবি দুবে লি’খেছেন, নেহার ছবি প্র’চণ্ড সাহস জোগায়।
নেহা কাক্কর ১৯৮৮ সালের ৬ই জুন উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশে জ’ন্মগ্রহণ করেন। তিনি বলিউডের নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী সোনু কাক্করের ছোট বোন এবং তার ভাই টনি কাক্করও একজন গায়ক। নেহা দিল্লিতে বেড়ে ওঠেন এবং নতুন দিল্লির উত্তম নগরের নিউ হলি পাবলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি চার বছর বয়সে গান গাওয়া শুরু করেন। একাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন ২০০৬ ইন্ডিয়ান আইডলের দ্বিতীয় মৌসুমে অংশগ্রহণ করেন নেহা। এই প্রতিযোগিতার পর তিনি ২০০৮ সালে মিট ব্রসের সুরে নেহা দ্য রক স্টার অ্যালবামের মধ্য দিয়ে সঙ্গীত শিল্পে প্রবেশ করেন। ২০১৩ সালে তিনি ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো চলচ্চিত্রের ধাতিং নাচ গানে কণ্ঠ দেন। ২০১৪ সালে তিনি কুইন চলচ্চিত্রের লন্ডন ঠুমাকদা গানে কণ্ঠ দেন।
মঞ্চে দর্শক মাতাতে জুড়ি নেই তার। রক, পপ কিংবা ক্ল্যাসিকাল সব গানের স’ঙ্গেই নিজে’র দক্ষ’তা বিশেষভাবে তুলে ধ’রতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেহার কোটি কোটি ভক্ত আর ফলোয়ার আছে। সামাজিক মাধ্যমে ভারতীর জনপ্রিয় সেলিব্রেটিদের নেহা আজ অন্যতম আসনে অধিষ্ঠিত। রূপের মাধুরীতেও অনায়াসেই টেক্কা দেয়ার ক্ষ’মতা রাখেন ভারতীয় গায়িকাদের মধ্যে অন্যতম সেরা গায়িকা নেহা।
বলিউড অনেক সিনেমাতেই প্লেব্যাক গানে দে’খতে পাওয়া যায় তাকে। এছাড়া ইউটিউবে তার গান মানেই লক্ষাধিক ভিউস তো থাকেই। শ্রুতিমধুর কণ্ঠ সেই স’ঙ্গে উজ্জ্বল রূপ। সব মিলিয়ে অনেকের স্বপ্নের মুখ ও চরিত্র গায়িকা নেহা। ইন্ডিয়ান আইডলের প্রতিযোগী থেকে ওই অনুষ্ঠানের বিচারক হওয়ার রেকর্ড সৃষ্টি ক’রেছেন নেহা। একেবারেই ভিন্ন ধাঁচের গলার কারণে উপমহাদেশের শ্রোতাদের কাছে নেহার গান দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায়।
শুধু টিভি শো নয়, ইউটিউবেও দারুণ জনপ্রিয় তিনি। ভারতীয় গায়িকাদের মধ্যে তরুণ প্রজ’ন্মের কাছে উদীয়মান তারকা বনে গেছেন তিনি। ভারত নয়, ২০১৬ সালে ঢাকার শ্রোতাদের সুরের মূর্ছনায় ভাসিয়েছেন গায়িকা নেহা কাক্কর। তারুণ্য, সাফল্য, জনপ্রিয়, মেধাবী, সারল্য- এসব কিছুই যেন নেহার স’ঙ্গে মানিয়ে যায়। গানের পারিশ্রমিকেও তিনি ঈর্ষণীয় এখন। নেহা গান গাইলে দর্শক মন্ত্রমুগ্ধ হবে আর তা জনপ্রিয় তো হবেই। এজন্য তিনি হাল সময়ের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকের তালিকায় নিজেকে নিয়ে আসতে পেরেছেন। সামাজিক অনেক কাজেই নেহা আজ এগিয়ে আসেন। সরল মনের স’ঙ্গে সাফল্য এ দুয়ের অনবদ্য যুগল তিনি। তরুণদের তিনি স্বপ্নের সারথী হতে বলেছেন।
স্বপ্ন পূরণের জন্য দিনরাত পরিশ্রম ক’রতে হবে। সাধনা না থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় না বলেই তিনি মনে করেন। আর নিজে’র কাজে’র প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা তো থাকতেই হবে। ক’ঠিন সময় দীর্ঘ হয় না যদি পরিশ্রম করার মা’নসিকতা থাকে। তবে নিজেকে ভালোবাসতে হবে। কারণ একমাত্র নিজেই নিজেকে এগিয়ে নিতে পারে। নেহা কাক্কররের কয়েকটি জনপ্রিয় গানগুলো হলো- ‘দিলবার দিরবার’, ‘কালা চাশমা’, ‘আঁখ মা’রে’সহ আরো অনেক। ইন্ডিয়ান আইডলসহ নেহা কাক্কর গানের রিয়েলিটি শো সা রে গা মা পা লি’ল চ্যাম্পসে বিচারক হিসাবেও উপস্থিত হন।