ভিক্ষার টাহা জোমাইয়া দুইজন দুইজনের জামা কিইন্যা দিছি!

বরিশাল নদীবন্দর এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে আকাশ-হালিমা দম্পতির অন্যরকম ঈদ উদযাপন। ভিক্ষার টাকা জমিয়ে একে অপরের জন্য নতুন পোশাক কেনা, ভাগাভাগি করে খাবার খাওয়া, সেজেগুজে শহরে ঘুরতে বের হওয়া- এসবই যেন বিশুদ্ধ ভালোবাসার প্রমাণ বহণ করে।

বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী আকাশ চাঁদপুরের বাসিন্দা। তার স্ত্রী হালিমা বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাতারহাটের মেয়ে। তাদের সম্পর্কের শুরুটাও ছিল অন্যরকম ভালোবাসায় ভরা। দাম্পত্য জীবন শুরুর গল্পটা বললেন হালিমা নিজেই, ভিক্ষার টাহা জোমাইয়া দুইজন দুইজনের জামা কিইন্যা দিছি। আকাশ মোরে থ্রি-পিস দিছে আর মুই পাঞ্জাবি কিইন্যা দিছি আকাশরে। হেইগুলা গায়ে দিয়া ঘুরতে বাইর হইছি। আজকে পায়ে হাইট্টাই পুরা শহর ঘুরমু।

তিনি আরো বলেন, তিন বছর আগে মুই বরিশাল লঞ্চঘাডে ডিম বিক্রি করতাম। হেই সোমায় আকাশ মোর প্রেমে পড়ে। ও মোর কাছাকাছি ঘুর ঘুর করত। মোরে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে ও একবার অটোরিকশার চাকার নিচেও মাথা দিছিল। এরপর ঘাটের লোকজনই আমাগো বিয়া দেয়। বিয়ার পর মুই কিছু করি না, আকাশ ভিক্ষা কইরা মোরে খাওয়ায়। আবার মাঝেমইধ্যে ঘাডের লোকজন খাবার দিয়া যায়।

হালিমা বলেন, মোগো আপন বলতে কেউ নাই, বাড়িঘরও নাই। হ্যার লইগ্যা লঞ্চঘাডেই থাকতাছি। বিয়ার তিন বছরে দুইডা বাচ্চা হইছিল। কিন্তু দুইডাই জন্মের কয়দিন পর ঠাণ্ডা লাইগ্যা মইরা গ্যাছে। আকাশ মোরে অনেক ভালো পায়। ঝগড়াঝাডি হইলেও মোরে ছাইড়্যা যায় না। মুইও অরে অনেক ভালো পাই। মোরা অনেক সুখে আছি।