রশিদ কামিন্সকে টপকে ১ম স্থানে উঠে এলেন মুস্তাফিজ

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেস আক্রমণের এক ভরসার নাম মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ দলের এক অনন্য প্রতিভার নাম মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ দলকে একটি কথা সর্বত্র প্রচলিত আছে সবসময় তা হলো বাংলাদেশ দলের পেস অ্যাটাক বিশ্বমানের নয়।

বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণে তেমন ধার নেই। বাংলাদেশ দলে এমন কোনো পেসার নেই যারা একটি ম্যাচের প্রেক্ষাপট একাই বদলে দিতে পারে। এমন পেসারের অভাব অনেকদিন ধরেই অনুভব করছিলো বাংলাদেশ দল।

ঠিক এমন সময় ধুমকেতুর মতো ক্রিকেটে আবির্ভাব হলো কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের। যাকে কিনা কেউই চিনতো না। কিন্তু জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে নিজেকে চিনিয়েছেন। নিজের জাত চিনিয়েছেন।

২০১৫ সালের ১৮ই জুন ভারতের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ ওয়ানডের প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেক হয়ে যায় কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ভারত সেই ম্যাচ খেলার আগেও জানতো না যে আজ তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।

সেই ম্যাচে ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপ একাই গুড়িয়ে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ক্রিকেট ইতিহাসের দশম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে অভিষেকের ম্যাচে ৫ উইকেট নেবার কৃতিত্ব অর্জন করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপকে রীতিমতো একাই নামিয়েছেন‌ মোস্তাফিজ। এছাড়াও ওয়ানডে অভিষেকে ম্যান অফ দা ম্যাচ হবার কৃতিত্ব অর্জন করেন মোস্তাফিজুর রহমান। ওয়ানডেতে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রথম শিকার রোহিত শর্মা।

বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান আর সেরা দলের বিপক্ষে এমস ইতিহাস গড়া অভিষেকের পর মোস্তাফিজকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলে অটো চয়েজ তিনি।

শুধু বাংলাদেশই নয় দুর্দান্ত পারফর্ম করে মোস্তাফিজ জায়গা করে নিয়েছিলেন আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলেও। আইসিসির সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরষ্কারও জিতেছিলেন তিনি।

মোস্তাফিজ এখন অবশ্য উদীয়মান নেই। ধিরে ধিরে বেড়ে ক্যাারিয়ারের বয়স। ৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এসে একবার চোখ বুলানো যাক মোস্তাফিজের ওয়ানডে পারফর্মের দিকে। আগের সেই মোস্তাফিজ আছেন না কি হারিয়ে গেছেন।

পরিসংখ্যান ঘাটতে গেলে অনেকটা অবাক হবেন আপনি। চমকে উঠতে পারেন মোস্তাফিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ার দেখে৷ কেননা সেই অভিষেকের পর থেকে ওয়ানডেতে মোস্তাফিজকে একটি দিক থেকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি এখনো কেউই।

মোস্তাফিজের সময় ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে এখনো ক্রিকেট খেলছেন এমন বোলারদের মধ্যে বোলিং স্ট্রাইক রেটে মোস্তাফিজের নামটা সবার উপরেই৷ ৬৪ ওয়ানডেতে মোস্তাফিজের উইকেট সংখ্যা ১১৮ টি।

যেখানে ৩১৪০ বল করেছেন তিনি। প্রতি ২৬.৬১ বলে উইকেট নিয়েছেন ফিজ। এই রেকর্ডে মোস্তাফিজের পর দ্বিতীয়তে আছেন আফগান লেগি রশিদ খান। ২৬.৬৬ স্ট্রাইক রেটে উইকেট নিয়েছেন রশিদ।

আবার ওয়ানডে ইতিহাসে কমপক্ষে ৫০ ম্যাচ খেলেছেন এমন বোলারদের স্ট্রাইক রেট যদি দেখা যায় সেখানেও সবার উপরে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার পরেই আছেন রশিদ খান। তার পরে আছেন মিচেল স্টার্ক,মোহাম্মদ শামির মতো পেসাররা।

তবে ওয়ানডেতে কমপক্ষে ৫০ উইকেট নিয়েছেন এমন বোলারদের মধ্যে স্ট্রাইক রেটে মোস্তাফিজের অবস্থান চতুর্থ। এই রেকর্ডে শীর্ষে আছেন নিউজিল্যানডের কোরি অ্যান্ডারসন।