আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কে বা কারা ‘টাইপ-টু ডায়াবিটিস’-এ আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন, এবার তার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। এর আগে অসম্ভই ছিল। সেই পথ দেখালেন ভারতের বীরভূমের লাভপুরের ভবতোষ দাস। দেশটির ফরিদাবাদের ‘ট্রান্সলেশনাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট (টিএইচএসটিআই)’-এর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক তিনি।
ভবতোষ, তার ছাত্রী শ্রুতি সাক্সেনা ও তাদের সহযোগীদের আরও কৃতিত্ব, গবেষণাটি একই সঙ্গে চালানো হয়েছে দুটি মহাদেশের দুটি দেশ ভারত ও ডেনমার্কের নাগরিকদের উপর। একটি দেশের জলবায়ুতে শীতের প্রাধান্য। অন্য দিকে, ভারতের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। তারা দেখেছেন আবহাওয়া বিপরীতধর্মী হলেও টাইপ-টু ডায়াবিটিস হওয়ার আগে দুটি দেশের নাগরিকদেরই অন্ত্রে কয়েকটি বিশেষ ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। সঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায় অন্য কয়েক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া।
গবেষণাটি চালানো হয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় বায়োটেকনোলজি মন্ত্রণালায় (ডিবিটি) ও সুইডিশ সরকারের অর্থায়নে।
গবেষকদলে রয়েছেন ফরিদাবাদের ‘টিএইচএসটিআই’, ম্যাড্রাস ডায়াবিটিস রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এমডিআরএফ), টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) এবং ডেনমার্কের কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আম্তর্জাতিক বিজ্ঞান-গবেষণা পত্রিকা ‘বায়োমেড সেন্ট্রাল (বিএমসি) জিনোম মেডিসিন’-এ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কে বা কারা কিছু দিনের মধ্যেই টাইপ-টু ডায়াবিটিস-এ আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন, এই গবেষণার ফলে আগামী দিনে তার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। চিকিৎসকরা আগেভাগেই সতর্ক করতে পারবেন। টাইপ-টু ডায়াবিটিস যাতে না হয়, সে জন্য খাদ্যাভ্যাসের কী কী পরিবর্তন করা প্রয়োজন, কোন কোন খাদ্য বেশি পরিমাণে খেতে হবে, কোনটা কম খেতে হবে, তা বলে দিতে পারবেন চিকিৎসকরা।
ভবতোষ ও তার সহযোগীদের গবেষণার ফলাফল এ-ও জানাচ্ছে, টাইপ-টু ডায়াবিটিস হওয়ার আগে ভারতীয় ও ডেনমার্কের নাগরিকদের অন্ত্রে যে ব্যাক্টেরিয়াদের পরিমাণ বেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে, ওই রোগে প্রায়শই ব্যবহৃত ওষুধ ‘মেটফর্মিন’ খাওয়ার পর অন্ত্রে সেই ব্যাক্টেরিয়াদের পরিমাণের পরিবর্তন হয়।