ডিভোর্সের পরও সাবেক স্ত্রী নিয়ে কক্সবাজারে গেলেন প্রধান শিক্ষক, ফেসবুকে তোলপাড়!

ধ’র্মান্তর হয়ে মুসলিম নারীকে বিয়ের এক বছর পর স্ত্রীর অজান্তেই তালাক দিয়ে আবার তাকে নিয়েই কক্সবাজারে বেড়াতে যান টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষক দীনো বন্ধু প্রামানিক। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মনোয়ারা সিদ্দিকী। এদিকে, স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে ওই নারী আদালতসহ সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। দীনো বন্ধুর বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ভূষন্ডি গ্রামে। ধ’র্মান্তর হয়ে মুসলিম নারীকে বিয়ের বিষয়টি নিয়ে গত ৩১ মার্চ ‘ধ’র্মান্তর হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিয়ে, অতঃপর স্ত্রীকে অস্বীকৃতি’ শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

এরপর বিষয়টি নিয়ে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। মনোয়ারা সিদ্দিকী বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি আমার স্বামী দীনো বন্ধু প্রামানিক ওরফে দ্বীন ইসলাম আমাকে তালাক দেন। কিন্তু বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি গত ১৬ মার্চ আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে যাই। আমরা সবাই সি-সান কটেজে উঠি।

এরপর ১৯ মার্চ আমার স্বামী দ্বীন ইসলাম ফোনে যোগাযোগ করে তিনি কক্সবাজার যান। ওইদিন স্বামী পরিচয়ে হোটেলের পরিচয়বহিতে স্বাক্ষর দিয়ে ৪০৮ নম্বর রুমে সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি আমার সাথে থাকেন। সেখানে একসাথে ছবি তুলতে চাইলেও তিনি ছবি তুলতে আগ্রহ দেখায়নি। এরপরও কয়েকটি ছবি তুলি। অজ্ঞাত কারণে রাতে তিনি অন্য একটি হোটেলে চলে যান। পরদিন সকালে আবার হোটেলে এসে আমাকে নিয়ে টেকনাফে বেড়াতে যান।

২১ মার্চ কক্সবাজার থেকে ফিরে অজ্ঞাত ব্যক্তির মাধ্যমে তালাকনামা হাতে পাই। যাতে ডিভোর্সের তারিখ রয়েছে ২৮ জানুয়ারি। আমাকে ডিভোর্স দিয়ে ডিভোর্সের খবর না জানিয়ে তিনি আমার সাথে কক্সবাজার যাওয়ায় আমি হতভম্ব হই। তিনি বলেন, আমার প্রথম স্বামী অন্যত্র বিয়ে করায় আমাদের ডিভোর্স হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর পর দ্বীন ইসলামের প্ররোচনায় পড়ে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি । এই বয়সে আমি ঘর ছাড়া হতে চাই না। আমি আমার স্বামীর সাথে সংসার করতে চাই।

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীনো বন্ধু প্রামানিক ধ’র্মান্তর হয়ে ইসলাম ধ’র্মগ্রহণ করে দ্বীন ইসলাম নাম রাখেন। এরপর ২০১৭ সালে টাঙ্গাইল শহরের একটি মার্কেটে প্রধান শিক্ষক দিনোবন্ধু প্রামানিকের সাথে পরিচয় হয় মনোয়ার সিদ্দিকা নামে ওই গৃহবধূর। দিনোবন্ধু প্রামানিক দোকান কেনার কথা বলে কৌশলে ওই গৃহবধুর সাথে সম্পর্ক করেন। সম্পর্কটি এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। তাদের দুজনের প্রেমের সম্পর্ক হওয়ার সুবাধে ওই গৃহবধূকে ভারতের শিলিগুঁড়ি দার্জিলিং-এ নিয়ে দুইবার চিকিৎসা করান তিনি।

২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সাভার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাজী অফিসে গিয়ে কাজী মুমিনুল ইসলামের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ভাতকড়া দূর্গাপুর গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেন ও রোমিছা বেগমের তালাকপ্রাপ্তা ওই মেয়ে মনোয়ার সিদ্দিকীর সাথে চার লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। বিয়েতে সম্মতি করতে ওই দিনই ঢাকা নোটারি পাবলিক থেকে এফিডেভিট করে দীনো বন্ধু নাম পরিবর্তন করে দ্বীন ইসলাম হন। এছাড়াও একবার কলকাতায় ঘুরতেও নিয়ে যান প্রধান শিক্ষক। অতঃপর স্ত্রীকে অস্বীকৃতি জানালে গত ৯ মার্চ টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দীন ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন।