কৃষকের ছেলে আরিফুলের মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, এলাকায় খুশির বন্যা

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ২৩৩৩তম হয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কৃষকের ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৭১.২৫ নম্বর। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণের ফলাফল ঘোষণার পর আরিফুলের পরিবার ও আগনুকালী গ্রামজুড়ে বইছে খুশির বন্যা।

অদম্য ইচ্ছাশক্তিই সফলতার পথ দেখিয়েছে আরিফুলকে। শিক্ষাজীবন জুড়েই আর্থিক দুশ্চিন্তা ছিল আরিফুলের নিত্যসঙ্গী। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

আরিফুল সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের আগনুকালী গ্রামের মো. আবুল কাশেম ও রেনু বেগমের ছেলে। চার সন্তানের মধ্যে আরিফুল সবার ছোট।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আরিফুলের বাবা একজন কৃষক। বাড়িতে রয়েছে একটি টিনের ঘর। সেই একটি ঘরেই থাকেন পরিবারের সবাই।

দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। আরিফুলের বড় ভাই আবু রায়হান পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করছেন।

আরিফুল ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। তিনি খাষসাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও ট্যানেলফুলে বৃত্তি পান।

এসএসসিতে জিপিএ-৫ ও রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

ছোট থেকেই আরিফুলের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি অধিকাংশ সময়ই লেখাপড়ার পেছনে ব্যয় করেছেন।

আরিফুল জানান, স্কুল-কলেজে পড়াশুনার সময় মন চাইলে একটা ভালো পোশাক কিনতে পারতাম না। কারণ আমার জন্ম গরিবের ঘরে। মা-বাবা খুশি হয়ে যা কিনে দিতেন, আমি তাতেই খুশি থাকতাম। স্কুল ও কলেজে পড়াশুনা করা অবস্থায় বিভিন্ন দিক দিয়ে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় সকল স্যার। আর এজন্য সকল স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

আগনুকালী পশ্চিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক আলহাজ্ব মাহবুবুল হোসেন জোস্না বলেন, আরিফুল অত্যন্ত মেধাবী ছেলে। সে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আমরা গর্বিত। সে আমাদের বিদ্যালয়সহ ইউনিয়নবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছে।