সত্যিই বাচ্চাদের চেয়ে স্বামীরাই নারীদের অধিক যন্ত্রণা দেয়

আমাদের সমাজে নারী মানে পদে পদে যন্ত্রণা। সেই ছোট বেলা থেকে নানা বাধা নিষেধ আরোপিত হয় মেয়েদের উপর। সবসময় একটা আতঙ্কে থাকতে হয়। কারণ, আশেপাশে হায়নারা ঘাপটি মেরে থাকে নারীর উপর হামলে পড়ার জন্য। এছাড়া, নারী তার চিরচেনা বাড়ি ছেড়ে যেতে হয় নতুন বাড়িতে, খাপ খাওয়াতে হয় নতুন পরিবেশে।

তার পর সন্তান জন্মদান, প্রসব বেদনা কত ভয়ঙ্কর তা নারীরা ছাড়া কেউ জানেনা। আর এই সন্তান বড় করার যন্ত্রণা তো আছেই। কত রাত না ঘুমিয়ে কাটাতে হয় মায়েরাই ভালো জানেন। এত কিছুর পর গবেষণায় দেখা যায়, নারীদেরকে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দেয় তাদের স্বামীরা!

ফলে সৃষ্টি হয় পারিবারিক অশান্তি। সবাই চায় পরিবারে শান্তি, তাই স্বামীদের জানা উচিত তাদের কোন কাজগুলো তাদের সঙ্গীকে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দেয়। এগুলো জেনে সমাধান করলে পরিবারে শান্তি আসবে। চলুন জেনে নিই স্বামীদের যেসব কাজ স্ত্রীদেরকে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দেয়।

১. একজন স্বামী একজন স্ত্রীর কাছে একটা অতিরিক্ত বাচ্চার মত।

একটা বাচ্চা মানুষ করতে মায়েদের কত যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় যাদের নিজেদের বাচ্চা আছে বা ছোট ভাই বোন আছে তারা জানেন।। এর মধ্যে আপনি যদি বাড়তি যন্ত্রণা দেন, তখন চিন্তা করুন সেটা নারীর জন্য কত বেশি যন্ত্রণাদায়ক হয়?

গবেষণায় দেখা যায়, ৪৩ বছর আগ পর্যন্ত পুরুষরা বাচ্চাদের মত আচরণ করেন। কারণ হিসেবে দেখা যায়, পুরুষরা তাদের বাচ্চাদের সাথে বাচ্চা হয়ে খেলতে ভালোবাসেন। ফলে, সেই আচরণটা চালিয়ে যান সবসময়। এখন চিন্তা করুন ৩৫ বছরের একজন ৭ বছরের বাচ্চাদের মত আচরণ করলে কেমন লাগবে? এটা স্ত্রীদের দৈনন্দিন যন্ত্রণাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সকলের উচিত এ বিষয়ে সচেতন হওয়া।

২. গৃহস্থালীর অতিরিক্ত কাজ নারীদের জন্য চাপ হয়ে দাঁড়ায়।

এক গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষরা গৃহস্থালীর কাজে নারীদেরকে সাহায্য করেনা। ফলে বাসার কাজ, বাচ্চা সামলানো, রান্না করা, পরিস্কার করা, আবার অনেক নারী বাজার করা, বিভিন্ন বিল পরিশোধ করা সহ বহু কাজ করে থাকেন। এসব কাজের পরে স্বামীর জৈবিক চাহিদা মিটাতে হয়। সব মিলিয়ে একজন নারীকে বহু মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে হয়।

সমাধানঃ

খুব সহজ সমাধান, স্বামীদের উচিত স্ত্রীদের কাজে সাহায্য করা। আমি অনেক কিছু করে আসছি এমন মানসিকতা দূর করা। পুরুষদের বোঝা উচিত নারীদের কাজের পরিধি, কত বেশি কাজ করতে হয় একজন নারীর। এই বোধ যদি পুরুষদের মধ্যে আসে তাহলে তাদের স্ত্রীরা ভালো থাকবেন, পরিবারে সুখ থাকবে, বাচ্চারা মানুষ হবে।

৩. নারীদের মধ্যে অপরাধবোধ কাজ করে।

বহু কাজ একা সামলালে সবসময় চিন্তা করতে হয় কোন কাজটা বাকি রয়ে গেলো। ফলে, অধিক মানসিক যন্ত্রণা পেতে হয়। এত কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে ফলে রাতে ঘুমাতে পারেনা, নারীরা অসুস্থ্ হয়ে পড়ে।

সমাধানঃ

সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে একজন পুরুষ। পুরুষ যদি বাসায় এসে বকা-ঝকা না করেন তাহলে তাদের স্ত্রীরা একটু শান্তি পায়। সব পুরুষের মধ্যে এই বোধটুকু জাগ্রত হওয়া উচিত যে, নারীরা বাসায় তাদের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করেন।

৪. স্ত্রীরা নিজেদেরকে সময় দিতে পারেনা।

প্রত্যেক মানুষের দিনশেষে একটু একা সময় দরকার বা একা থাকা দরকার। পুরুষরা চায়ের দোকান বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ পায় কিন্তু, তাদের স্ত্রীদের সেই সুযোগ নেই। তাদের সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয় এবং সবসময় লক্ষ‍্য রাখতে হয় তাদের স্বামীদের বলা কোন কাজ বাদ পড়ছে কিনা। কারণ, অধিকাংশ পুরুষ বাসায় এসে স্ত্রীদের উপর তাদের রাগ ঝাড়েন। স্বামীদের এসব কাজ স্ত্রীদের অনেক বেশি যন্ত্রণা দেয়। ফলে তারা অল্পতে অসুস্থ্ হয়ে পড়েন।

সমাধানঃ

আপনার স্ত্রী আপনার সঙ্গী, আপনার বন্ধু। তার কাজকে সম্মান করুন, তাকে মানসিকভাবে সমর্থন করন, ভুলেও বকা ঝকা করবেন না। দেখবেন পরিবারে কি পরিমাণ সুখ বিরাজ করছে।

এই বিষয়ে আপনার মূল্যবান অভিমত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।