হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক বিভিন্ন কর্মসূচির বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক দাবি করেছেন, মিডিয়ার শক্তি যদি পত্রপত্রিকা আর টেলিভিশনের পর্দা হয়, তবে তাদের কাছে আছে সোশ্যাল নেওয়ার্ক। শুক্রবার (০২ এপ্রিল) বাদ জুম্মা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এক বি’ক্ষো’ভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
এছাড়াও বৃহস্পতিবার (০১ এপ্রিল) রাজধানীর দুটি মাদ্রাসায় আ’ইনশৃ’ঙ্খলা বাহিনীর অ’ভিযা’নে পাঁচ শতাধিক ‘কো’রবা’নির ছু’’রি’ জ’ব্দের ঘট’নায় তী’ব্র সমা’লোচ’না করেন তিনি।
মামুনুল হক বলেন, এই অ’’স্ত্র উদ্ধারের নামে সরকার নাটক করছে। জনগণের সামনে হে’য়প্র’তিপ’ন্ন করে হেফাজতে ইসলামের নামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে না’টক মঞ্চস্থ করছে সরকার। এ নাটক অনেক পুরনো, হেফাজতকে ক’’ল’ঙ্কি’ত করতেই সরকার এ ধরনের অ’ভি’যা’ন পরিচালনা করছে।
ক্ষু’’ব্ধ মামুনুল হুঁ’শিয়া’রি দিয়ে বলেন, এভাবে তাদের হেয় করে অ’ভি’যা’ন চা’লি’য়ে ছুরি জ’ব্দ করা হলে আগামীতে আর বিনামূল্যে রাষ্ট্রের জন্য ঈদুল আজহায় পশু কো’রবানি থেকে বি’র’ত থাকবে কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোরবানির ছু’’রি সংরক্ষণ হয়তো আর নাও করতে পারি। এই ছু’’রিগুলো দেশের কল্যাণে নিয়োজিত, এই ছু’’রিগুলো এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কো’রবানির দায়িত্বে নিয়োজিত। বারবার এই ছু’’রি নিয়ে আপনারা (সরকার) নাটক করেন। কারা এই কাজ করল, জানতে চাই, মু’খো’শ উন্মোচন করতে হবে।
এরপরেই সংবাদমাধ্যম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিডিয়া অনেক শ’ক্তিশা’লী আমরা জানি, মিডিয়া শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করে তাও জানি। এ সময় সংবাদমাধ্যম নিয়ে মামুনুল বক্তব্য শুরু করলে হেফাজতকর্মীরা চ’র’ম ক্ষু’’ব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্ষো’’ভ প্রকাশের সময় মামুনুল হাতের ইশারায় নিভৃত করতে স’চেষ্ট হন নেতাকর্মীদের। তাদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দেন, তারপরেই কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি।
এরপরে আবারও বক্তব্য শুরু করেন মামুনুল। মিডিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা যতই প্র’ভাবশা’লী হন, যতই শক্তিশালী হন, পরিবেশ পরিস্থিতিকে যতই নিয়ন্ত্রণ করেন, মনে রাখবেন, আল্লাহর চেয়ে বেশি শক্তি আপনাদের নেই।
ইসলামের বিপক্ষে গণমাধ্যম অবস্থান করছে দাবি করে তিনি বলেন, আপনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকার দলীয় এমপির বি’রু’দ্ধে কোনো রিপোর্ট করতে পারেন না, শতবর্ষী বাংলাদেশের অ’হং’কার জামিয়া ইউনুসিয়ায় যারা হা’’ম’লা করল তাদের ব্যাপারে রিপোর্ট করতে পারেন না, যারা আমার মায়ের বুক খালি করল, যারা আমার ভাইদের হ’’ত্যা করল, তাদের মু’খো’শ উন্মোচন করতে পারেন না। আপনারা পারেন, হেফাজতে ইসলামের ক’ল্পিত তা’ণ্ড’বের কাহিনী রচনা করতে।
তিনি অ’ভিযো’গ করেন, ২০১৩ সাল থেকে গণমাধ্যম চেষ্টা করছে হেফাজতে ইসলামকে মাইনাস করবার। হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে জাতির কাছে নেতিবাচক তথ্য উপস্থাপন করছে এই মাধ্যম।
তিনি আরও বলেন, এ অ’পচেষ্টা করে কি হয়েছে, আপনারা যতই চেষ্টা করছেন, আপনাদের সব অ’পচে’ষ্টার জবাব দিচ্ছেন আমার আল্লাহ।
এসময় তিনি হু’’ঙ্কা’র দিয়ে গণমাধ্যমের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের কাছে টেলিভিশনের পর্দা আছে, আমাদের কাছে সাড়ে তিন লাখ মসজিদের মেম্বার আছে। আপনাদের কাছে যদি জাতীয় পত্র-পত্রিকা থেকে থাকে আমাদের কাছে সোশ্যাল মিডিয়া আছে। জনগণকে আগের দিনের মতো বোকা ভাববেন না। এ সময় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করার আহ্বান জানান, এই হেফাজত নেতা।
গত ২৬ মার্চ হেফাজতের বি’ক্ষো’ভ কর্মসূচি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আ’’গু’নের ঘ’টনার বিষয়ে তার দাবি, ‘হয়তো কেউ ভু’ল করে, আবেগের বশবর্তী হয়ে গ্রামের কেউ, পল্লী গাঁয়ের কেউ, না জেনে, না বুঝে, প্রেসক্লাবে অথবা দুই একজন সাংবাদিকের ওপর ভু’ল আ’চ’র’ণ করে থাকতে পারে।কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা সেজন্য দুঃখ প্র’কা’শ করেছি। কিন্তু গণমাধ্যমের কর্মীরা আমাদের সে কথা না শুনে আপনারা হেফাজতে ইসলামকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
মামুনুল হক হুঁ’শি’য়া’রি দিয়ে বলেন, যদি ইসলামকে ব’য়’ক’ট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যদি হেফাজতে ইসলামকে বয়কট করেন এই জনগণ মিডিয়াকে বয়’কট করবে।
তিনি সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান রেখে বলেনে, ‘আমরা চাই, মিডিয়া অতীতেও দেশ-জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, সরকারের সমা’লোচনা করেছে। সরকারের সমালোচনার মাধ্যমে সঠিক পথ দেখাবে গণমাধ্যম। সরকার যেন জনগণকে গু’’লি করে হ’’ত্যা করতে না পারে, তার বি’রু’দ্ধে আপনাদের গণমাধ্যমকে সোচ্চার হতে হবে। এভাবে যদি আপ’নারা থাকেন, তবে জনগণ মিডিয়ার পাশে থাকবে।
বি’ক্ষো’ভ সমাবেশ শেষে কোনো মি’ছি’ল না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে কর্মসূচি শেষ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।