শেখ হাসিনা কি করবেন?

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জনগণ তাকিয়ে আছে শেখ হাসিনার দিকে। শেখ হাসিনা কি করবেন? একদিকে যেমন বাংলাদেশের অফুরন্ত সম্ভাবনা, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা তেমনি বাংলাদেশের রয়েছে নানারকম ষড়যন্ত্র, সংকট এবং অনিশ্চয়তা। এই সংকট, অনিশ্চয়তা এবং ষড়যন্ত্রগুলোকে কিভাবে প্রতিরোধ করবেন শেখ হাসিনা, এই প্রশ্নই এখন মানুষের।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যখন বাংলাদেশ উদযাপন করছে, করোনার সংক্রমণ নতুন করে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। শেখ হাসিনা কি করবেন? করোনা সংক্রমণের প্রথম দফায় শেখ হাসিনা একক প্রজ্ঞা এবং বিচক্ষণতায় বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলা করতে পেরেছিল। অন্যান্য দেশগুলো যেভাবে করোনায় নাস্তানাবুদ হয়েছিল, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটেনি। দ্বিতীয় দফায় শেখ হাসিনা কি কৌশল নিবেন, কীভাবে তিনি এদেশের জনগণকে স্বাস্থ্যঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবেন। এর জন্য বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষ তাকিয়ে আছেন শেখ হাসিনার দিকে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা দেখছি আবার স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের নোংরা খেলা। ঠিক যেরকম নোংরা খেলা শুরু হয়েছিল ১৯৭১-এ। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মৌলবাদী অপশক্তিকে দমনের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা কি করবেন? শেখ হাসিনা কি হেফাজতকে দমন করতে পারবেন? হেফাজত যে নব্য মৌলবাদী শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে, বিভিন্ন ইস্যুতে তারা হুমকি দিচ্ছে, তা বন্ধের জন্য শেখ হাসিনা কি করবেন?

এদেশের মানুষ যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে, তখন দুর্নীতি এক বড় আগ্রাসন হয়ে দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের জনগণের সামনে। আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ম্লান করছে দুর্নীতি। শেখ হাসিনার দুর্নীতি প্রতিরোধে কী করবেন? তিনি কি পিকে হালদারসহ যে সমস্ত দুর্বৃত্ত বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন? বাংলাদেশের মানুষ জানেন যে শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করে চলছেন। কিন্তু এই পিকে হালদার বা যারা বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন?

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে একটি বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। সামনে রোজার মাস। এই রোজাকে ঘিরে বাজারে নতুন সিন্ডিকেটের কারসাজির কথা শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ তাকিয়ে আছে শেখ হাসিনার দিকে। তিনি কী করবেন? এরকম অনেক সঙ্কট, সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ উৎকণ্ঠিত, আতঙ্কিত। আর এই সমস্ত সংকট, সমস্যাগুলো বাংলাদেশের অর্জন সবকিছু ম্লান করে দিতে পারে। আর এই সংকট থেকে উত্তরণের উপায় জানেন একজনই। তিনি হলেন শেখ হাসিনা। গত এক যুগে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে একটি ধারণা তৈরি হয়েছে তা হলো শেখ হাসিনাই পারেন জনগণের সমস্যা সমাধান করতে।

শেখ হাসিনা ছাড়া জনগণের আস্থার জায়গা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে প্রায় নিঃশেষিত হয়ে গেছে। দেশের জনগণ মন্ত্রী-এমপিদের উপর তেমন আস্থাশীল নন। গত এক যুগে মন্ত্রী-এমপিরা তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকাও রাখতে পারেননি। বরং সব সংকটের সমাধানের জন্য তারা তাকিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। আর শেখ হাসিনাও তার বিচক্ষণতা, প্রাজ্ঞতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে এসব সংকটের সমাধান করেছেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এখন আমাদের সামনে যে নতুন সঙ্কটগুলো আসছে, সেই সংকটগুলো মোকাবেলায় শেখ হাসিনা কি করবেন? সেই প্রশ্নই করছেন এদেশের মানুষ। কারণ শেখ হাসিনা ছাড়া এদেশের মানুষের আশা-ভরসার জায়গায় এখন খুবই কম।