তরুণীর সঙ্গ পেতে ২৭ লাখ টাকা দেন ৮০ বছরের বৃ’দ্ধ!

তরুণী মেয়েটিকে দেখেই আকৃষ্ট হন মোজাম্মেলন হোসেন। তার বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। স্ত্রী আছেন। তারও বয়স হয়েছে। এই অব’স্থায়ও তরুণীর কাছে ছুটে যান তিনি। ওই তরুণীর লেখাপড়াসহ সকল ব্যয় বহন করবেন বৃ’দ্ধ মোজাম্মেল। বিনিময়ে মোজাম্মেলকে দিতে হবে অন্তঃরঙ্গ মু’হূর্ত। তরুণী রাজি।

প্রথম দেখাতেই ওই তরুণীর হাতে কয়েক হাজার টাকা দিয়ে কিছু একটা কিনে নিতে বলেন ধনাঢ্য মোজাম্মেল। ধানমন্ডিসহ রাজধানীর বিভিন্নস্থানে রয়েছে মোজাম্মেলের একাধিক বহুতল বাড়ি। প্রতি মাসে আয় হয় বিপুল টাকা। সন্তানরা থাকেন যুক্তরাজ্যে। স্ত্রীও থাকেন সেখানে। মাঝে-মধ্যে দেশে আসেন। সম্পদের জন্য ঢাকায় থাকতে হয় বৃ’দ্ধ মোজাম্মেলকে।

মোজাম্মেল (ছদ্মনাম) ভাবতেই পারেননি সঙ্গী হিসেবে এমন সু’ন্দরী কম বয়সী একটি মেয়ে পাবেন তিনি। প্রথম দেখাতেই জা’নিয়ে দেন মেয়েটিকে তার বেশ ভালো লে’গেছে। কাল থেকেই এই তরুণীকে তার ফ্ল্যাটে চান তিনি। এই মেয়েকে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে এই বৃ’দ্ধকে। ঘ’টনার শুরু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। তার ধানমন্ডির বাসায় ভাড়াটে হিসেবে উঠেন রিপা ও রিপার স্বামী। রিপার সংসারে অর্থকষ্ট। সময়মতো ভাড়া দিতে পারেন না। এরমধ্যেই বাড়িওয়ালা মোজাম্মেলের নজর প’ড়ে ওই নারীর ওপর। দেখা সাক্ষাত হলেই গা ঘেষে দাঁড়িয়ে কথা বলেন। কথা বলতে বলতে শ’রীরে হাত দেন। নিরবে সহ্য করেন এই নারী। রিপা জা’নান, তিন মাসের ভাড়ার টাকা বাকি ছিল। বাধ্য হয়েই অনেক কিছু সহ্য ক’রতেন।

বৃ’দ্ধ মোজাম্মেল প্রস্তাব দেন, ‘তোমা’র ভাড়া দিতে হবে না। তুমি আমাকে অন্তঃরঙ্গ সময় দাও। তোমাকে পেলেই আমি খুশি।’ ওই নারী রাজি হন না কিছুতেই। এরমধ্যে রিপাকে উপহার দেন একটি স্মা’র্টফোন। উদ্দেশ্য ভিডিও কলে কথা বলা। রিপা পু’লিশকে জা’নিয়েছেন, ভিডিও কলে কথায় কথায় উত্তেজনা ছড়াতেন মোজাম্মেল। এভাবেই চলছিলো দিনের পর দিন। রিপাতে আর সন্তুষ্ট থাকতে পারছিলেন না তিনি। এবার রিপাকে প্রস্তাব দেন, ‘কম বয়সী একজন বান্ধবী জুটিয়ে দাও। আমিতো বান্ধবী ছাড়া চলতেই পারি না।’ বিনিময়ে টাকা দিবেন তিনি। প্রস্তাবটি লুফে নেন রিপা।

শুরু হয় বান্ধবী জোটানোর মিশন। রিপা যোগাযোগ করলেন আজগর নামে এক যুবকের স’ঙ্গে । আজগরের মাধ্যমে সন্ধান পেলেন রিয়াজে’র। তার বাড়ি ফরিদপুরে। রিয়াজে’র অন্য নাম সুমন। কাজ করেন এক আ’ইনজীবীর সহকারী হিসেবে। রিয়াজে’র প’রামর্শে শুরু হয় মিশন। বৃ’দ্ধ মোজাম্মেলের শয্যাসঙ্গী হতে প্র’স্তুত সু’ন্দরী তরুণী। ডেকে এনে ঢাকার একটি বাসায় দেখানো হয় ওই তরুণীকে। তরুণীর পাশে বসে কথা বলেন মোজাম্মেল।

বেশ ভালোলাগে তার। এই তরুণীকেই চাই। পরদিন সকালে বৃ’দ্ধ মোজাম্মেলের স’ঙ্গে একান্তে সময় কাটাবেন এই তরুণী। কথানুসারে সব প্র’স্তুত। বৃ’দ্ধ মোজাম্মেলের বাসাতেই ঘ’টে ঘ’টনা। ওই বাসাতে ওই তরুণীকে নিয়ে নির্ধারীত রুমে যান রিপা। বেশ কিছুক্ষণ পর বের হন তিনি। তারপরই রুমে যান বৃ’দ্ধ মোজাম্মেল। এরমধ্যেই ওই বাসায় ঢুকে রিয়াজসহ কয়েক জন। সাত-আট মিনিট পরে মোজাম্মেল ওই রুম থেকে বের হতেই সামনে দাঁড়ান রিয়াজ ও তার সঙ্গীরা। হু’মকি দিয়ে জা’নান, যা বলবো তাই করেন। এতক্ষণ রুমের ভেতরে যা হয়েছে তার সবই ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে। কথা না শুনলে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাবে।

মোজাম্মেল ক্ষু’ব্ধ হন। তার উচ্চপদস্থ অনেক ব’ন্ধু রয়েছে। প্রয়োজনে তাদের ডাকবেন। দ্রুত রিয়াজসহ সবাইকে বাসা থেকে বের হতে বলেন। রিয়াজ চটে যান। সবাইকে ডাকতে বলেন। সবার সামনে মোজাম্মেলের আ’সল চেহারা প্র’কাশ ক’রতে চান রিয়াজ। এবার ভ’য় পান মোজাম্মেল। মান-সম্মান সব যাবে, ভেবে কাঁপতে থাকেন তিনি। রিয়াজ দা’বি করেন ১০ লাখ টাকা। টাকা দিলেই এটি গো’পন রাখা হবে। দর কষাকাষির পর বাধ্য হয়েই পাঁচ লাখ টাকা দেন মোজাম্মেল। ভিডিও তখনও রিয়াজে’র কাছে।

বৃ’দ্ধ ভ’য়েই থাকেন। কিছুদিন পর পর নিজ থেকেই ফোনে অনুনয় করেন রিয়াজকে। তার মান-সম্মান যেনো ন’ষ্ট না করা হয়। রিয়াজ এবার দা’বি করেন, পাঁচ লাখ টাকা। বৃ’দ্ধ দেন চার লাখ। এভাবে ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদাবাজি করেই যাচ্ছিলো চক্রটি। বিভিন্ন সময়ে ভিডিও প্র’কাশের ভ’য় দেখিয়ে ২৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা লুটে নেয় এই চক্র। অবশেষে গত বছরের ১৮ই জানুয়ারি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আ’ইনে হাজারীবাগ থা’নায় একটি মা’মলা করেন ওই বৃ’দ্ধ। একপর্যায়ে মা’মলার তদ’ন্তের দায়িত্ব পায় সাইবার ক্রাইম তদ’ন্ত বিভাগ। গত ২রা ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর ও রাজবাড়ি জে’লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রিপা ও রিয়াজকে। সিনিয়র সহকারী কমি’শনার ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ জা’নান, গ্রেপ্তারের পর আসামিরা পু’লিশের কাছে অপরাধ স্বী’কার করেছে। সুত্র: মানবজমিন