২১ বছর আগে রাজধানীর সূত্রাপুরের আব্দুল কাদিরের মেয়ে ফারজানা বেগমকে বিয়ে করেন নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের চারিখাদা গ্রামের শাহান শাহ সরদার। তাদের ঘরে তিন মেয়ে, চতুর্থ সন্তানও ফারজানার পেটে। এখন তিনি আট মাসের অন্তঃ’সত্ত্বা। এরইমধ্যে আরো দুটি বিয়ে করেছেন তার স্বামী।
তৃতীয় স্ত্রীকে ঘরে তুলতে বাধা দেয়ায় অন্তঃ’সত্ত্বা ফারজানাকে অমানবিক নি’র্যা’ত’ন করেছেন শাহান শাহ। গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ফারজানা। শনিবার সন্ধ্যায় স্কুলশিক্ষক শাহান শাহ’র বাড়িতে ঘট’নাটি ঘ’টেছে।
জানা গেছে, মাইজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক শাহান শাহ সরদারের সঙ্গে ২১ বছর আগে বিয়ে হয় ফারজানার। তাদের বড় মেয়ে শাহজাদী মারিয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থী, মেঝো মেয়ে শাহ আফরিন নবম শ্রেণির ছাত্রী ও ছোট মেয়ে ফাতেমা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। এখন চতুর্থ সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন ফারজানা। বর্তমানে তিনি আট মাসের অন্তঃ’সত্ত্বা।
ফারজানা বেগম বলেন, বিয়ের পরই আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির তথ্য জানতে পারি। যেহেতু বিয়ে করেছি সে কারণে সব মুখ বুঝে সহ্য করে এসেছি। বিয়ের ৪-৫ বছর পর অর্থাৎ ২০০৫ সালে পলি নামে এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করে আমার স্বামী। পরবর্তীতে পরিবার ও আমার অনুরোধে তাকে তালাক দেয় সে। এরপর সংসারে কিছুদিন শান্তি ছিল। কিন্তু মাঝেমধ্যেই আমার স্বামীর বি’রু’দ্ধে নারী ঘটিত বিভিন্ন অভি’যোগ পেতাম।
তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি নিজের এক ছাত্রীকে বিয়ে করে সে। এটি তার তৃতীয় বিয়ে। মারিয়া নামে ওই নারী মাইজপাড়া ইউনিয়নের কল্যানখালী গ্রামের বাসিন্দা। ৬ মার্চ সন্ধ্যার দিকে তাকে নিয়ে আমার স্বামী বাড়িতে নিয়ে আসে এবং ঘরে তুলতে চায়।
তখন আমি বাধা দেয়ায় আমার শ্বশুর সবদার সরদার, স্বামী শাহান শাহ সরদার ও তার তৃতীয় স্ত্রী মারিয়া মিলে আমাকে কি”ল-ঘু”ষি-লা”থি মা’র’তে থাকে। আমার মেয়েরা ঠেকাতে গেলে তারাও রক্ষা পায়নি। আমার গর্ভে আট মাসের সন্তান রয়েছে। পে’টে লা”থি মা”রায় প্র’চুর র’ক্ত’ক্ষ’রণ হয়েছে। নি’র্যা’ত’নের এক পর্যায়ে আমি অচে’তন হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে হাসপাতালের বিছা’নায় দেখতে পাই।
ফারজানা বেগমের মেয়ে শাহ আফরিন বলেন, মা’রধ’রের এক পর্যায়ে আমার মা অ’চেতন হয়ে পড়লে আমরা তিন বোন অ্যাম্বুলেন্সে করে রাতেই তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। জরুরি বিভাগে ডাক্তার দেখানোর পর অবস্থায় খারাপ হওয়ায় তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। রাত ২টার দিকে মাকে আমরা এখানে ভর্তি করি।
আফরিন আরো বলেন, ঘ’টনার পর আমার বাবা আমাদের ঘরে তালা ঝু’লিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আমাদের নানাভাবে হু’ম’কি দিচ্ছেন। এখন আমরা কোথায় উঠবো ভেবে পাচ্ছি না। আমার বাবা অপ’রা’ধী। এ পর্যন্ত তার দ্বারা অন্তত ২৫ জন নারী ক’ল’ঙ্কি’ত হয়েছে। আমরা তার সঠিক বিচার চাই।
অভি’যুক্ত শি’ক্ষ’ক শাহান শাহ সরদার বলেন, আমি তৃতীয় বিয়ে করায় আমার প্রথম স্ত্রী পরিকল্পিতভাবে এসব করেছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভি’যোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেব।