৩ বছর পর সৌদির মানবাধিকার কর্মী লুজাইনের মু’ক্তি

অবশেষে তিন বছর পর মু’ক্তি পেলেন সৌদি আরবের সুপরিচিত নারী মানবাধিকার কর্মী লুজাইন আল হাথলুল। তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাকে কারাগার থেকে মু’ক্তি দেয়া হয়েছে।

বুধবার তার বোন লিনা এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘লুজাইন এখন বাড়িতে’। তিনি তাদের পারিবারিক একটি ভিডিও কলের স্ক্রিনশটও পোস্ট করেছেন।

তার অপর এক বোন আলিয়া অন্য একটি পোস্টে লিখেছেন, আল হাথলুল সৌদি আরবে তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে আছেন। হাথলুলের মু’ক্তিতে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন।’

তবে লুজাইন আল হাথলুলের মু’ক্তির বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। টুইটারে যারা সমর্থন জানিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন লুজাইনের বোন লিনা।

তিনি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, লড়াই এখনও শেষ হয়নি। সব রাজনৈতিক বন্দির মু’ক্তি ছাড়া তিনি পুরোপুরি খুশি নন বলেও জানিয়েছেন।

লুজাইন আল হাথলুল প্রথম খবরের শিরোনামে উঠে আসেন ২০১৪ সালে। সে সময় গাড়ি চালিয়ে সৌদি আরব থেকে আরব আামিরাতের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। তখন অবশ্য নারীদের গাড়ি চালানোর বিষয়ে কড়া নিষেধাজ্ঞা ছিল সৌদিতে। যদিও পরবর্তীতে গাড়ি চালানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে নারীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

এরপর ২০১৮ সালের ১৫ মে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন নারী অধিকার কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়। নারীদের গাড়ি চালানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে আসছিলেন তারা।

গত বছরের ডিসেম্বরে লুজাইন আল হাথলুলকে প্রায় ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির একটি আদালত। এর আগে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শুনানিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে সৌদিকে।

এক হাজার একদিন কারাভোগ করেছেন আল হাথলুল। তার সাজা ঘোষণার আগেও কিছুদিন তাকে কারাগারেই কাটাতে হয়েছে। এছাড়া কারাভোগের পুরোটা সময়ই তাকে একাকি থাকতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সৌদির রাজনৈতিক পদ্ধতি পরিবর্তন এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

শুরু থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই মানবাধিকার কর্মীকে মু’ক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, নারী অধিকার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে তিনি একজন ক্ষমতাশীল আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে কারাগার থেকে মু’ক্তি দেয়া সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।

এদিকে, আল হাথলুলের মু’ক্তি”র ঘটনায় অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এক টুইট বার্তায় বলেন, তিনি আল হাথলুলের মু’ক্তি’র ঘটনায় খুশি হয়েছেন।