খালেদার বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি বিএনপির

অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে সরকারের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চায় বিএনপি।

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের সময় বৃদ্ধি নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার দুপুরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এই দাবির কথা জানান।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারি আদেশে চিকিৎসার জন্য চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করাটা অমানবিক বলে আমরা মনে করি। সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে তিনি যাতে বিদেশে যেতে পারেন সে ব্যাপারে যে বিধি-নিষেধ সেটা প্রত্যাহার করাটা মানবিক একটা কর্ম বলে আমরা মনে করি। এটা আমাদের দাবি।

পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার গত ২৭ আগস্ট সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। সেই আবেদন আইন মন্ত্রণালয় যায় পরীক্ষার জন্য।

এ বিষয়ে ৩ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়ার দণ্ডের কার্যকারিতা আরও ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়ে সম্মতিসূচক মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

বুধবার মহিলা দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ নেতা-কর্মীদের নিয়ে নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, তিনি এখন ঘরে থাকতে পারছেন, যদিও নানা বিধি নিষেধের মধ্যে। একজন মানুষ তার বয়স প্রায় ৭৬ বছর। তিনি খুবই অসুস্থ আমরা সবাই জানি। তাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে হয়েছে এবং তার উন্নত চিকিৎসা নেয়া দরকার। দীর্ঘদিন তিনি হাসপাতালে ছিলেন কিন্তু সুস্থ হতে পারেন নাই।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা মানবিক বাংলাদেশ চাই। তার সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে তাকে বাইরে নিতে হবে। তিনি যাবেন কি যাবেন না, যাওয়ার প্রয়োজন হবে কি হবে না সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু সরকারি আদেশে তার বাইরে যাওয়া চিকিৎসার জন্য নিষিদ্ধ করাটা অমানবিক বলে আমরা মনে করি।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের স্বপ্ন ছিলো- একটা স্বাধীন শুধু নয়, একটা গণতান্ত্রিক, একটা মানবিক, এটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের স্বাধীনতার এতো বছর পরে আমরা এদেশে একদলীয় শাসন দেখেছি, সামরিক স্বৈরশাসন দেখেছি, বেসামরিক স্বৈরাশাসনও দেখছি। ফলে এদেশে গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায় যথাযথভাবে বাস্তবায়ন এখনো হয় নাই।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বার বার গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, আহত করা হয়েছে। সেই বহুদলীয় গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আর সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার সরকার ১৯৯১ সালে সেই সংসদ। আজকে সেই গণতন্ত্র সংকটের মুখে।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে মহিলা দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় মহিলা দলের নেতা হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, ইয়াসমীন আরা হক, পিয়ারা মোস্তফা, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, নিলুফার ইয়াসমীন নিলু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।