পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

বিতর্ক আর সমালোচনার মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য অধিদদফরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে জনপ্রশাসন সচিবের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।

অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক অবসরে যাওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাকে আবার দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়।

বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজে উদ্যোগী হয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে এ নিয়োগ দেন। কিন্তু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার পরই তার বিরুদ্ধে চরম দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলা শৈথিল্য, পক্ষপাত এবং নানা রকম দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়।

বিশেষ করে করোনা সংক্রমণের শুরুর পর থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সীমাহীন দায়িত্বহীনতা স্পষ্ট হতে থাকে। এর মধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছিল। কিন্তু একের পর এক ব্যর্থতা দুর্নীতির অভিযোগ এবং নানা রকম অপকর্মের দায়ভার মাথায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।

গত বুধবার (১৫ জুলাই) রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ নিজ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। সচিবালয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নানের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেন তিনি।

লিখিত ব্যাখ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল সাবেক স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের মৌখিক নির্দেশে।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তির লিখিত আদেশ এ ব্যাখ্যার সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে কিনা। তিনি জানান, সেই চুক্তি করা হয়েছিল সাবেক স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলামের মৌখিক নির্দেশে। যিনি বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আবদুল মান্নান আরও উল্লেখ করেন, সব বিস্তারিত জানার জন্যই আমরা তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম।

রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার বিভন্ন বিষয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে নির্দেশেই অধিদফতর রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি করে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শারমিন আকতার জাহান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’ বলতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কী বোঝাতে চেয়েছেন, সে বিষয়ে তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।