সৌদি আরবে করোনায় ৩ প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সৌদি আরবেও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার সাথে মৃতের সংখ্যাও বেড়ে চলছে। এ পর্যন্ত করোনায় সৌদি আরবে ১০ জন মারা গেছেন, তার মধ্যে ৩ জন বাংলাদেশি রয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেদ্দা। গতকাল পর্যন্ত সৌদি আরবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৬৩ জন এর মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১৬৫ জন।

সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে বাংলাদেশি মৃত ব্যক্তিরা হলেন- কোরবান, তার বাগি সাভার ঢাকা, দ্বিতীয় ব্যক্তি একজন ডাক্তার, মোহাম্মদ আফাক হোসেন মোল্লা, তার বাড়ি নড়াইল সদর। তৃতীয় মৃত্যুবরণকারী হলেন মোহাম্মদ হাসান, লোহাগড়া , তার বাড়ি চট্টগ্রাম । ২৪ মার্চ থেকে ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত এ তিনজন মৃত্যুবরণ করেন।

কয়েকদিনের ব্যবধানে তিনজন প্রবাসীর মৃত্যুর খবরে হঠাৎ করেই সৌদি আরবে কর্মরত ২২ লাখ প্রবাসীদের মাঝে নেমে আসে শোকের ছায়া।

দীর্ঘ ১৯ দিন যাবত সৌদি আরবে লকডাউন এরপর সৌদি আরব জুড়ে কারফিউর পর থেকে অনেকটা এক ঘরে হয়ে পড়ে প্রবাসীরা। কিন্তু রিয়াদ দাম্মাম মদিনা জেদ্দা মক্কা প্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যুষিত অঞ্চল গুলিতে লকডাউন এর তেমন কোন প্রভাব পড়েনি যার কারণে সৌদি সরকার ইতোমধ্যে মক্কা এবং মদিনা বাংলাদেশি অধ্যুষিত অঞ্চল গুলোতে ২৪ ঘণ্টা কারফিউ জারি করেছে।

এরইমধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা সৌদি সরকার স্থানীয় নাগরিকসহ প্রবাসীদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ জারি করে নানা সুবিধাদি।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তিন মাসের ইকামা ফি মওকুফ। প্রবাসীদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি ফিরে আসলেও গতকাল হঠাৎ করে তিনজন প্রবাসী বাংলাদেশি করোনাভাইরাস এ আক্রান্ত হবার পর থেকে অনেকটা আতঙ্ক বিরাজ করছে প্রবাসীদের মনে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশ ইনভেস্টর এবং এনআরবি কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা তিনজন মৃত্যুর খবর পেয়েছি কিন্তু কত সংখ্যক বাংলাদেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এখনো বের করা যায়নি। এইজন্য প্রথমে বাংলাদেশ দূতাবাসকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে প্রবাসীদের সৌদি সরকারের আইন মেনে নিজেদের স্বার্থে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আজ যে তিনজন বাংলাদেশি মৃত্যুর খবর এসেছে এতে করে সৌদি সরকারের কাছে আমাদের সর্বোপরি বাংলাদেশের ইমেজ সমস্যা সংকটে পড়বে। অনতিবিলম্বে সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে সৌদি আরবস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

অন্যদিকে কিছু সংখ্যক প্রবাসীদের অসচেতনতা কারণে মৃত্যুর মিছিলে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি বলে মনে করছেন কমিউনিটি নেতা এবং সৌদি বাংলা বিজনেস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, প্রবাসী যেসব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনগুলো রয়েছে দল-মত নির্বিশেষে সমন্বিত উদ্যোগে প্রবাসীদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ না করলে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে, এতে করে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রেমিটেন্স আহরণে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে এজন্য রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

সূত্র : চ্যানেল আই অনলাইন