মহাকাশে যাচ্ছেন প্রথম যে পর্যটকরা

১৫ বছর ধরে কেটি মেইসনরুজ অপেক্ষা করছেন এমন এক সফরের যেটি তাকে পৃথিবী থেকে নিয়ে যাবে ভিন্ন এক জগতে। ৬১ বছর বয়সী কেটি মেইসনরুজ একটি বিজনেস স্কুলের প্রফেসর।

২০০৫ সালে আড়াই লাখ ডলার দিয়ে মহাকাশে যাওয়ার জন্য টিকিট কাটেন। খুব অল্প বয়স থেকেই তিনি মহাকাশের স্বপ্ন দেখতেন। এখনও পরিষ্কার মনে করতে পারেন ১৯৬৯ সালে নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ অলড্রিন যখন প্রথম চাঁদে পা রাখেন।

ভার্জিন গ্যালাকটিক যখন প্রথম ঘোষণা করল, তারা মহাকাশে সাধারণ পর্যটকদের নিয়ে যাবে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তার টিকিট বুক করেন মিসেস মেইসনরুজ। তবে মহাকাশে যাওয়ার টিকিট কাটলেও এ পরিকল্পনা বেশ গোপনই রেখেছিলেন তিনি। কেবল তার পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই জানতেন তার মহাকাশে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা।

ভার্জিন গ্যালাকটিক বলছে, শেষ পর্যন্ত তাদের মহাকাশ ফ্লাইটের উদ্বোধন হবে এ বছরই। সবকিছু ঠিকঠাক চললে ভার্জিন গ্যালাকটিক হবে প্রথম কোনো বেসরকারি কোম্পানি যারা পর্যটকদের মহাকাশে নিয়ে যাবে।

এ পর্যন্ত ৬০০ লোক তাদের মহাকাশ ভ্রমণের টিকিট কিনেছেন। এদের মধ্যে জাস্টিন বিবার এবং লিওনার্ডো ডিক্যাপ্রিওর মতো সেলিব্রেটিও আছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোও পিছিয়ে নেই।

আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের কোম্পানি ‘ব্লু অরিজিন’ আশা করছে তাদের মহাকাশ ফ্লাইটও এ বছরই শুরু হবে। আর টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক এরই মধ্যে ঘোষণা করেছেন, চাঁদকে প্রদক্ষিণ করতে তাদের স্পেস এক্সের ফ্লাইটের প্রথম যাত্রী হবেন একজন জাপানি ধনকুবের।

২০১৯ সালে সুইস ব্যাংক ইউবিএস একটি রিপোর্টে অনুমান করেছিল, আগামী দশ বছরে মহাকাশ পর্যটন ৩০০ কোটি ডলারের ব্যবসায় পরিণত হবে।

পর্যটকদের প্রথম যে দলটি মহাকাশে যাবে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে তারা প্রথম তাদের ‘স্পেসস্যুট’ পরার সুযোগ পান। এ স্পেসস্যুট ডিজাইন করেছে স্পোর্টসওয়্যার ব্র্যান্ড ‘আন্ডার আর্মার।’

এ মহাকাশ পর্যটকরা এরই মধ্যে নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে ‘স্পেসক্রাফট আমেরিকায়’ ভার্জিন গ্যালাকটিকের টার্মিনাল পরিদর্শন করেছেন। এখান থেকেই পর্যটকরা ভার্জিন গ্যালাকটিকের স্পেসশিপে আরোহণ করবেন। তাদের নিয়ে স্পেসশিপটি ৯০ মিনিট আকাশে থাকবে। এরমধ্যে তারা পৃথিবীর কক্ষপথে থাকবেন মাত্র কয়েক মিনিট।

রাশিয়ার সয়ুজ স্পেসফ্লাইটের জন্যও কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ করে টিকিট কেটেছে সাত জন ব্যক্তিগত অভিযাত্রী। মার্কিন মহাকাশ সংস্থাও এরকম পথে যাচ্ছে। তারা স্পেসএক্স এবং বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে তাদের নভোচারীদের মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার জন্য।