রিফাত হত্যার মামলা নিয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি তোলে ধরলো পুলিশ!


ঢাকা : বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের আজ এক মাস পূর্ণ হলো। গত ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করেন নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ তাদের সহযোগীরা। এরপর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিফাত শরীফ।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি ভিডিও ভাইরাল হলে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো দেশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি ওঠে সব মহলে।

খোদ প্রধানমন্ত্রীও দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এরপর থেকে একে একে গ্রেফতার হয় এ মামলার এজহারভুক্ত সাত আসামিসহ ভিডিও ফুটেজ ও তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও আট অভিযুক্ত। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সাতদিন পর পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড।

এ মামলার এক নম্বর সাক্ষী ও নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসবাদ করার পর জেলহাজতে পাঠিয়েছে। মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানো নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ঘটনা নিয়ে। কারা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

এখনো হত্যা মামলাটি কেঁচো খোঁড়ার পর্যায়েই রয়েছে। সাপের নাগাল মিলছে না। রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর নেপথ্যে মাদক বাণিজ্যের বিষয়টি উঠে আসে। নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির ব্যানারে মানববন্ধনে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল। মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে রিফাতকে খুন করা হয়েছে-এমন তথ্য বিভিন্ন সূত্রেও জানা গেছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরগুনার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হত্যাকাণ্ডের এক মাসের মধ্যে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম একদম শেষের পথে। এ মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা বেশ কিছু আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশেষজ্ঞদের মতামতের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এসব আলামতের মধ্যে নয়ন বন্ডের বাসা থেকে জব্দ করা মেয়েদের একটি জামা, একটি চিরুণী, খোদাই করে শামুকের গায়ে এন+এম লেখা একটি শামুক, নয়ন ও মিন্নির একসঙ্গে একটি ছবি রয়েছে।

আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনে মধ্যেই এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন জানান, দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে অত্যন্ত সতর্কভাবে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে মামলার তদন্তের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ মামলার ১৫ জন অভিযুক্ত গ্রেফতারের পর আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।