মিন্নির জামিন না পেয়ে তাৎক্ষণিক যা বললেন তার আইনজীবী

বরগুনা: বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন চেয়ে ফের আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগামী ৩০ জুলাই জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান শুনানির দিন ধার্য করেন।

বিষয়টি নিয়ে মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নির জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিস কেস হিসেবে মিন্নির জামিন শুনানির আবেদন করি। পরে আদালত শুনানি শেষে নিম্ন আদালতের নথি তলব করে আগামী ৩০ জুলাই মিন্নির জামিন শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।

গত ১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এরপর বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী। পরদিন বৃহস্পতিবার বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, মঙ্গলবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ ও বুধবার রিমান্ড মঞ্জুরের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।

এরপর শুক্রবার বিকেলে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে, রিফাত হত্যা মামলার অভিযুক্ত হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া কামরুল আহসান সাইমুনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সকালে আবেদনের পর দুপুরে সাইমুনের জামিন আবেদনের শুনানি হয়। পরে শুনানি শেষে আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইয়াসিন আরাফাত সাইমুনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

বিষয়টি জানিয়েছেন সাইমুনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদের।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনেই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে স্বামী রিফাত শরীফকে। গুরুতর আহত রিফাতকে ওই দিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এখন পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৫ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের সবাই রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।