হত্যাকাণ্ডে মিন্নি যেভাবে জড়িত, আদালতে জানালো রিফাত

বরগুনার প্রকাশ্যে সবার সামনে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী।

তৃতীয় দফায় ৭দিনের রিমান্ডের ছয়দিন শেষে আদালতে হাজির করা হয় রিফাতকে। বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রিফাত ফরাজী। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী রিফাত ফরাজীকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. হুমায়ুন করিব বলেন, তৃতীয় দফায় সাতদিনের রিমান্ড চলাকালে আদালতে হাজির করলে রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রিফাত ফরাজী। স্বীকারোক্তিতে রিফাত ফরাজী এ হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত বলেও আদালতের বিচারককে জানিয়েছেন। মিন্নি কিভাবে জড়িত ছিলেন সে সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে রিফাত। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে মিন্নিসহ ১৪ জন অভিযুক্ত রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া এ মামলার দুইজন অভিযুক্ত রিমান্ডে রয়েছেন। আর এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

এদিকে মিন্নির পক্ষে আইনি লড়াই করতে বড়গুনা যাচ্ছেন ১৫০ আইনজীবী।

মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিতে প্রথমেই ঘোষণা দিয়ে ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেছেন, তিনিসহ ঢাকা আইনজীবী সমিতির ৪০ জন আইনজীবী ঢাকা থেকে বরগুনা আদালতে শুনানির জন্য যাবেন।

এদিকে মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), নিজেরা করি, এএলআরডিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও প্রায় ১০০ আইনজীবী বরগুনায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ব্লাস্টের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেডআই খান পান্না গণমাধ্যমকে জানান, মিন্নিকে আইনি সহায়তার জন্য তার সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে প্রায় ১০০ আইনজীবী বরগুনায় যাবেন।

জেডআই খান পান্না বলেন, এরই মধ্যে আমাদের আইনজীবীরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। মামলার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছেন।

আরেক আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ জানান, ঢাকা থেকে আমরা ৪০ জন আইনজীবী বরগুনায় যাব। এখন যেহেতু ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি হয়ে গেছে। এ মামলার পরবর্তী ৩১ তারিখ জুলাই। ওইদিন আমরা যাব। ওইদিন মিন্নির দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করবো।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।