ঢাকা : ‘মিন্নি মা, মিডিয়ার সাথে কথা বল, তোকে নির্যাতন করা হয়েছে, আপনারা ওরে কথা বলতে দেন। আমার মেয়েকে জোর করে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। আমার মেয়ে অসুস্থ, প্লিজ ওকে নির্যাতন করবেন না।’ এভাবে শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকালে বরগুনার আদালতে কান্না করতে করতে মেয়েকে ডেকে ডেকে চিৎকার করছিলেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।
বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে শুক্রবার বিকেলে পাঁচদিনের রিমান্ডের তৃতীয় দিন দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মিন্নির স্বীকারোক্তি নিতে তাকে আদালতে তোলা হয়।
বিকেল ৫টার দিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে মিন্নি স্বীকারোক্তিমূলক এ জবানবন্দি দেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে আদালত থেকে বের করে কারাগারে নেয়া হয়। এসময় মিন্নিকে কারাগারে নিতে দু’জন নারী পুলিশ সদস্য আদালত থেকে হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে তোলে।
মিন্নির বাবা কিশোর
তিনি বলেন, ‘মিন্নি মা, মিডিয়ার সাথে কথা বল, তোকে নির্যাতন করা হয়েছে, আপনারা ওরে কথা বলতে দেন। আমার মেয়েকে জোর করে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। আমার মেয়ে অসুস্থ, প্লিজ ওকে নির্যাতন করবেন না। মেয়ে আমার জীবন বাজি রেখে তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছে। এটাই তার অপরাধ?’
পিকআপে তোলার সময় ও গাড়ির ভেতর বসে মিন্নি কিছু একটা বলার জন্য উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু পাশে থাকা নারী পুলিশ সদস্য এ সময় মিন্নির মুখ চেপে ধরেন।
এর আগে, বরগুনা পুলিশ লাইন্সে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার রাত ৯টায় মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
মামলায় মিন্নিসহ এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত ও জড়িত সন্দেহে ১৩ জন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় বর্তমানে ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী ও ৩ নম্বর আসামি রিশান ফরাজী বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে রয়েছে।
গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের প্রধান ফটকে মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ০০৭ গ্রুপের সদস্যরা।