সেই মাথা কাটা শিশু সজীবের বাকি দেহ উদ্ধার

মাথা কাটা শিশু সজীবের (৮) বাকি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোনা পৌর শহরের কাটলী এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের তিনতলা থেকে শিশুটির বাকি দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নেত্রকোনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফখরুজ্জামান জুয়েল তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নেত্রকোনা পৌর শহরের পাটপট্রি ব্রীজ সংলগ্ন কাটলী এলাকার কায়কোবাদ খানের নির্মাণাধীন তিনতলা ভবনের উপর থেকে রক্ত পড়তে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির বাকি দেহ উদ্ধার করে।

পরে সজিবের বাবাকে খবর দেওয়া হয়। তিনি এসে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন।

তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে থেকে একটি ধারালো কাটার (কাগজ কাটায় ব্যবহৃত হয়) উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এই কাটার দিয়েই তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় গণপিটুনীতে নিহত যুবকটি পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম রবিন (২৫)। নিহত শিশু সজিব ও রবিন একই এলাকার বাসিন্দা।

শিশু সজিব নেত্রকোনা সদরের আমতলা গ্রামের রিকশা চালক রইছ উদ্দিনের ছেলে। রইছ উদ্দিন তার পরিবার নিয়ে নেত্রকোনা পৌর শহরের কাটলী এলাকার হিরণ মিয়ার বাসায় ভাড়ায় থাকেন। আর রবিন নেত্রকোনা পৌর শহরের একলাছ মিয়ার ছেলে। পেশায় সে একজন রিক্সাচালক। সে মাদকাসক্ত বলে জানা গেছে।

নিহত শিশুটির বাড়ির মালিক হিরা মিয়া জানান, গণপিটুনিতে নিহত রবিন আগে তার বাসায় ভাড়া থাকতো। মাদকাসক্ত ছিল বলে কয়েক মাস আগে তাকে বাসা থেকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে রইছ মিয়ার বাসায় আসা-যাওয়া করতো রবিন।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম ও স্থানীয় লোকজন জানান, দুপুর ১টার দিকে শহরের কাটলি এলাকা দিয়ে রবিন হাতে ব্যাগ নিয়ে দৌঁড়াচ্ছিলেন। এলাকায় তাকে নতুন মনে করে স্থানীয় লোকজন তাঁর নাম-পরিচয় জানতে চান। রবিন আমতা আমতা করতে থাকলে লোকজন জিজ্ঞাস করেন, তাঁর ব্যাগের ভেতরে কী আছে? রবিন বলেন, তার ব্যাগের ভেতরে ভাঙারির জিনিস আছে। তাকে সন্দেহ হলে ওই ব্যাগটি দেখতে চায় স্থানীয়রা। কিন্তু তিনি ব্যাগটি না দেখাতে চাইলে স্থানীয়রা ব্যাগ নিয়ে টানা-হেঁচড়া করতে থাকে। একপর্যায়ে ব্যাগের ভেতর থেকে শিশুর কাটা মাথা ছিটকে পড়ে।

এর পরই রবিনকে ধাওয়া দেয় লোকজন। একপর্যায়ে শহরের নিউটাউন এলাকার অনন্তপুকুর পাড়ে তাকে পিটুনি দেয় এলাকাবাসী। এতে ঘটনাস্থলেই রবিনের মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সজীবের কাটা মাথা ও রবিনের লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়।