হজের আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা, সফর, ভ্রমণ করা। হজ শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম মুসলমানদের জন্য একটি ফরজ ইবাদত। এটি ইসলাম ধর্মের পঞ্চম স্তম্ভ। জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজের জন্য নির্ধরিত সময়। ‘শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম এবং মক্কায় গিয়ে হজকার্য সম্পন্ন করে ফিরে আসার সামর্থ্য রাখে, এমন প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। তবে নারীদের জন্য স্বামী বা মাহরাম পুরুষ সঙ্গে থাকা শর্ত।’ (ফতওয়া শামি, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৪৫৫)
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজের ইচ্ছা করে, সে যেন তা দ্রুত আদায় করে নেয়। কেননা মানুষ কখনো অসুস্থ হয়ে পড়ে, কখনো সম্পদ খরচ হয়ে যায়, কখনো সমস্যার সম্মুখীন হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস, নম্বর: ২০৭) হজে যাওয়ার সময় নিয়ত বিশুদ্ধ করে নিতে হবে। ‘মহান আল্লাহর হুকুম পালনার্থে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হজ করছি’—এমন নিয়ত করতে হবে। লোকে হাজি বলবে, সম্মান দেখাবে, প্রসিদ্ধি অর্জন হবে, ব্যবসা ভালো জমবে, নির্বাচনে ভালো করা যাবে—এ ধরনের মনোভাব নিয়ে হজ করলে সওয়াব তো হবেই না; বরং লৌকিকতার কারণে গুনাহ হবে। (মুসলিম, হাদিস নং: ১৯০৫)
হজের সার্বিক কাজে যেসব টাকা খরচ করা হবে, তা হালাল হতে হবে। হজের মধ্যে হারাম টাকা খরচ করাও হারাম। যে হজে হারাম টাকা খরচ করা হয়, সে হজ কবুল হয় না। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৫১৯) হজে যাওয়ার প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর করণীয় হলো, মানুষের অধিকারের প্রতি যত্নবান হওয়া। ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করা। ইবাদতে কোনো ত্রুটি থাকলে তা শুধরে নেয়া। তওবা-ইস্তিগফার করা। এমন সফরসঙ্গী নির্বাচন করা, যিনি নেককার ও সহযোগিতাকারী। বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত ও জিকির করা। হজের মাসআলা-মাসায়েল শেখা। (ফাতাওয়া আলমগিরি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২২০)