“হিজড়া” হল সমাজের প্রায় অবাঞ্ছিত। তাদের মধ্যে নারী বা পুরুষ কোন লি’ঙ্গেরই সম্পূর্ণ বিশিষ্ট থাকেনা। তারা না নারী না পুরুষ। তাই তারা সমাজের কোন সুযোগ সুবিধা পায়না। তাদের জন্য নেই কোন শিক্ষা ব্যবস্থা, নেই উপার্জন ব্যবস্থা। তাদের জন্য সরকার ভাবেনা। তারা অসুস্থ হলে পায়না চিকিৎসা করানোর সুযোগ। তারা কখনোই স্বাভাবিক ভাবে বাঁচার সুযোগ পায়না।
মুম্বাই ভিত্তিক স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ভারতে ৫ থেকে ৬ মিলিয়ন হিজড়া রয়েছে। ২০১৪ তে সুপ্রিম কোর্ট তৃতীয় লি’ঙ্গকে স্বীকৃতি দেয়। যারা আসলে পুরুষ নারী কোনটাই নয় তারা সমাজে স্বীকৃতি পায়। তবুও এই সমাজে তাদের আচার আচরন নিয়ে সবাই ব্যাঙ্গ করে। তাদের নিয়ে হাসাহাসি করে।
তারা সভ্য সমাজে বসবাস করার সুযোগ পায়না। লেখাপড়া থেকে শুরু করে খেলাধুলা সব কিছুতেই তারা পিছিয়ে। মেধাবী হওয়া সত্বেও তারা লেখাপড়া করার সুযোগ পায়না। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে ট্রেনে বাসে চাঁদা তোলে। বিভিন্ন খারাপ কাজে নিজেদের জড়িয়ে ফেলে। অথচ তাদের কিন্তু কোন দোষ নেই।
তাদের জন্মের উপর তাদের কোন হাত নেই, এমনকি তাদের বাবা মায়েরও কোন হাত নেই। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী xx প্যাটার্ন ক্রোমোজোমে কন্যা সন্তান হয় আর xy ক্রোমোজোম প্যাটার্নে হয় পুত্র সন্তান। নারীরা শুধু xx ক্রোমোজোম বহন করে আর পুরুষেরা xy।
পুরুষের ক্রোমোজোমের মধ্যে যে ক্রোমোজোম আগে ডিম্বানুকে নিষিক্ত করে সেই ভাবে তাদের সন্তান জন্ম নেয়। কখনো যদি স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে গিয়ে নারীর শরীরে নিষিক্তকরন বা বিভাজনের সময় কিছু অস্বাভাবিক প্যাটার্ন তৈরি হয়।
যেমন- xxy অথবা xyy। এই ধরনের প্যাটার্নের ফলে জন্মানো সন্তান হয় অস্বাভাবিক। কিছুটা মিশ্র গঠন হয় তাদের। তাদের মধ্যে নারী এবং পুরুষ দুই রকম বিশিষ্ট থাকে, কিন্তু কোনটাই সম্পূর্ণ থাকেনা। তাদেরকেই সমাজ হিজড়া বলে থাকে। তাদের জীবন খুব কষ্টে কাটে।
শোনা যায় তাদের যদি কোন ভাবে খুশি করা যায় তাহলে নাকি খুব ভালো। তারা একমাত্র খুশি হয় টাকা পেলে। তাদের টাকা দিয়ে খুশি করতে পারলে তারা যদি খুশি মনে আপনাকে একটি এক টাকার কয়েন দেয়, তাহলে আপনি খুব ভাগ্যবতী বা ভাগ্যবান। আর সেই কয়েন যদি আপনি নিজের কাছে একটি হলুদ কাপড় মুড়িয়ে রাখেন তাহলে কোনদিন আপনার অর্থের অভাব হবেনা।