যেভাবে গ্রেফতার হলেন দ্বিতীয় আসামি রিফাত ফরাজী

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহতের পর এবার দ্বিতীয় আসামি রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তাকে কোথা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা তদন্তের স্বার্থে জানাতে রাজি হয়নি পুলিশ।

রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার ও এ মামলার অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার নিয়ে তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বরগুনার পুলিশ মো. মারুফ হোসেন, বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেনসহ প্রমূখ। সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত দুইটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করা হয়। আজ তাকে আদালতে তোলা হবে।’

এ নিয়ে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৫ জন এবং সন্দেহভাজন হিসেবে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ মামলার এজাহারভুক্ত গ্রেফতাররা হলেন, মামলার ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি (২৩), ৪ নম্বর আসামি চন্দন (২১), ৯ নম্বর আসামি মো. হাসান (১৯), ১১ নম্বর আসামি মো. অলিউল্লাহ অলি (২২) ও ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় (২১)।

এছাড়া রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্ততে গ্রেফতাররা হলেন, মো. নাজমুল হাসান (১৯), তানভীর (২২), মো. সাগর (১৯), কামরুল হাসান সাইমুন (২১) ও রাফিউল ইসলাম রাব্বি। গ্রেফতারদের মধ্যে চন্দন ও হাসান সাত দিনের এবং সাগর, সাইমুন ও নাজমুল পাঁচদিনের রিমান্ডে রয়েছেন। আর রিফাত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার ১১ নম্বর আসামি অলি ও ফুজেট দেখে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হওয়া অভিযুক্ত তানভীর।

প্রসঙ্গত, ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলো রিফাত ফরাজী

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীকে (২৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে তাকে বরগুনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার সকালে বরগুনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ এ তথ্য জানায়। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগের উপ মহাপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ও বরগুনা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন। এ সময় আসামি রিফাত ফরাজীকে উপস্থিত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল বিভাগের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার রিফাত ফরাজীর কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। এই হত্যার সঙ্গে আরো অনেকে জড়িত আছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু জানানো যাচ্ছে না। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বরগুনায় প্রকাশ্যে স্ত্রী মিন্নির সামনে স্বামী শাহনেওয়াজ রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে নয়ন বন্ডসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সেকেন্ড কমান্ডদাতা হলেন রিফাত ফরাজী। এ ঘটনার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড মঙ্গলবার বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পরের দিন নিহত রিফাতের বাবা ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত নিহত নয়নসহ ৬ জন ও সন্দেহভাজন আরো ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।