সোহেল তাজ আবার কেন বিতর্কে

এক কঠিন সময়ে বাস করছি। এই সমাজে এখন আর কেউ কথা বলতে চায় না। আবার কেউ কেউ বুঝে না বুঝেও অনেক কিছুর সমালোচনা করছে। কারণে-অকারণে সমর্থন দিচ্ছে অন্যায় আর অসংগতিকে। সোহেল তাজের ফেসবুক লাইভ নিয়ে অনেক কিছুই মনে পড়ছে। পুরনো, নতুন মিলিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলছেন। কেউ বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সোহেল তাজ অচল। আবার কারও কথা, তিনি কেন কথা বলবেন? ভাবখানা এমন, তার ভাগ্নে অপহৃত হয়েছেন, তাতে কি? চুপ করে সহ্য করাটাই ছিল তার কাজ। আবুল হাসানের কবিতার মতো ঝিনুক নীরবে সয়ে যাবে। সোহেল তাজ এখনকার অনেকের মতো আসমান থেকে পয়দা হননি। তিনি একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এই পরিবারের অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। ’৭৫ সালের পর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের অন্যতম শীর্ষ নেত্রী হিসেবে। প্রতিবাদ করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে ভূমিকা রেখেছেন। সেই ইতিহাস এখন অনেকের মনে নেই। আবার অনেকে জানেনও না। দোষ দিয়ে কী লাভ? এখন দেশে সবাই আওয়ামী লীগ। গাছের পাতা, বাগানের আগাছাও এখন আওয়ামী লীগ। সবাই মনে করছেন, এমনই ছিল চিরদিন। ক্ষমতা আর রাজপথের ইতিহাস কখনই এক রকম হয় না। ছোট্ট এক জীবনে কম তো দেখা হলো না।

সোহেল তাজকে চিনি রাজপথ থেকে। এর আগে তাদের ধানমন্ডির বাড়িতে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও তার সঙ্গে কথা হয়নি। এমনকি মুন্নার সঙ্গে কয়েকবার গিয়েছিলাম তখনো দেখা হয়নি। ২০০১ সালের নির্বাচনে সোহেল তাজ এমপি হন প্রথম। এক কঠিন খারাপ সময় শুরু হয় সারা দেশে। সেই সময়টাকে এখনকার সঙ্গে মেলালে হবে না। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে সারা দেশের চিত্র দেখেছি। আবার নাঙ্গলকোটে দেখেছি পারিবারিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত অবস্থানের কারণে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসেই এক ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করে। এই পরিবেশ সামাল দিতে সেনা ডাকতে হয়েছিল। করতে হয়েছিল অপারেশন ক্লিনহার্ট। সেই অরাজক দিনগুলো নিয়ে আমার নিজের উপজেলা কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের কথা মনে পড়লে এখনো মন খারাপ হয়ে যায়। তখন প্রতিদিনই এলাকা থেকে ফোন আসত। খবর পেতাম কারও হাত কেটে ফেলা, কারও বাড়িঘর ভাঙচুরের। এটিএন বাংলা অফিসে আমরা সারা দেশের একই ধরনের খবর ও ভিডিও ফুটেজ পেতাম। সাধারণ মানুষের অপরাধ ছিল নৌকায় ভোট দেওয়া অথবা সমর্থন করা।

পরিবেশটা নষ্ট হতে শুরু করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পরই। নাঙ্গলকোটে গিয়ে আমি পরিস্থিতি অনুধাবন করি। হঠাৎ বদলে যায় নাঙ্গলকোটের প্রশাসন। পুলিশ বিএনপির পক্ষে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হয়রানি শুরু করে। বিষয়টি জয়নাল আবেদীন ভাইয়ের দৃষ্টিতে আনি। তিনি বললেন, দেখা যাক শেষ মুহূর্তে কী হয়। ঢাকা থেকে তিনি আশ্বস্ত হয়েছেন প্রশাসন একটু নিরপেক্ষতা দেখাচ্ছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে। আমি তার সঙ্গে একমত হতে পারিনি। ঢাকা ফিরে এলাম। এটিএন বাংলার বার্তা বিভাগের মাত্র দায়িত্ব নিয়েছি। এর মাঝে প্রতিদিন কথা হতো নাঙ্গলকোটের লোকজনের সঙ্গে। হঠাৎ করে বদলে গেছে সব কিছু। নাঙ্গলকোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়নাল আবেদীন ভূইয়া। ’৮৬ সাল থেকে তার পক্ষে ভোট করা শুরু আমার। আমাদের অঞ্চলটা একটু বিএনপি-ঘেঁষা। এর মাঝে বিএনপির সঙ্গে আমার আত্মীয়স্বজনের লড়াই শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি অনুধাবন করে জয়নাল ভাই টানা তিন দিন আমাদের বাড়িতে থেকে প্রচারণা চালান। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে আমাকেও যেতে হয়। একদিন চটিতলা নামের এক গ্রামে জয়নাল ভাই ও আমাদের ওপর হামলা হয়। বিএনপি-জামায়াতের সমর্থকরা বের হয়ে আসে রামদা আর পিস্তল হাতে। বোমা ফুটতে শুরু করে আতশবাজির মতো। দ্রুত জয়নাল ভাইকে গাড়িতে তুলে আমরা ফিরে আসি আমাদের গ্রামে। এখানে পারিবারিকভাবে আমাদের অবস্থান শক্ত ছিল। আমরা চলে আসার পর আওয়ামী লীগ কর্মীদের দোকান লুট, বাড়ি ভাঙচুর হয়। পুলিশকে ফোন করি। যে পুলিশ স্যালুট দিত দুই দিন আগে, ভোটের আগে হঠাৎ করেই সেই পুলিশের অন্য সুর। তারা বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পুলিশের নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভাঙা হয়। জয়নাল ভাইকে বললাম, এরপর লড়াইটা কীভাবে হবে? তিনি বললেন, ঢাকা থেকে নেতারা বলেছেন এগুলো আইওয়াশ। শেষ মুহূর্তে প্রশাসন আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেবে। ঢাকা ফিরে আসি। ভোটের ফলাফল সবার জানা। ভোটের পর নাঙ্গলকোট তছনছ হয়ে যায়। বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের শ্যামপুরে আওয়ামী লীগের দুই কর্মীকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। পরে সেই গ্রামে আমি গিয়েছিলাম। শুধু নাঙ্গলকোট নয়, সারা দেশের চিত্র তখন একই ছিল।

সারা দেশের এই ভয়াবহতা নিয়ে মুখ খুললেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি সংসদের ভিতরে-বাইরে কঠোর অবস্থান নেন। পত্রিকাগুলোয় টুকটাক খবর আসতে থাকে। টিভি মিডিয়া বলতে এটিএন বাংলা আর চ্যানেল আই। এটিএন বাংলার বার্তা বিভাগে আমি দায়িত্বে। একপর্যায়ে অত্যাচারের বিপক্ষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শুরু করেন আন্দোলন। কর্মীরা মাঠে নামতে পারত না পুলিশের কঠোরতায়। এমপি ও দলের সিনিয়র নেতারা মিছিল শুরু করেন। নবনির্বাচিত এমপি সোহেল তাজ তাদেরই একজন। ধানমন্ডি, পান্থপথে, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তাকে দেখা যেত। একদিন হরতাল চলাকালে ধানমন্ডি রাসেল চত্বর থেকে টেলিফোন পাই ক্রাইম রিপোর্টার মাহমুদুর রহমানের। মাহমুদ জানায়, রাজপথে সোহেল তাজ এমপিকে পুলিশ পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আরও অনেক কর্মী আহত হয়েছে। তবে সোহেল তাজ বেশি মার খেয়েছেন। একজন এমপি নিস্তার পেলেন না? মাহমুদ অফিসে এসে নিউজ বানালেন। আমরা সেই খবর প্রচার করি। প্রতিটি কর্মসূচিতে সোহেল তাজকে মাঠে দেখতাম। আরেক দিন রিপোর্টার নাজমুল হক সৈকত জানান, কর্মীদের বাঁচাতে গিয়ে সোহেল তাজ মার খেয়েছেন। কর্মীদের পুলিশ পেটাতে থাকলে সোহেল সামনে এসে রুখে দাঁড়ান। এরপর তার ওপর আঘাত হানা হয়। সোহেলের এ অবস্থান বিস্ময়কর। আমি তার পরিবারকে জানি। ছিলেন বাপ-মায়ের আদরের সন্তান। বোনেরা তাকে বেশি যতœ নিত। পড়াশোনার জন্য বড় বোনের বাসায় ওয়াশিংটন থাকতেন। তার বোনের স্বামী (এখন সাবেক) মুন্না আমাকে বলত, সোহেল গুডবয়।

ও খুব আদুরে ভাব নিয়ে বড় হয়েছে। সেই সোহেল মাঠের রাজনীতিতে প্রতিবাদী বলিষ্ঠ কণ্ঠ। এভাবেই বিএনপির শাসনকালে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মাঠে ময়দানে শেখ হাসিনার পাশে তাকে দেখেছি। শেখ হাসিনা তাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। সেই স্নেহের প্রকাশ দেখি ২০০৫ সালের শেষ দিকে তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময়। সফরসঙ্গীদের মধ্যে সোহেল তাজের মতো আমিও ছিলাম। এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও স্ট্যাম্পফোর্ড ইউনিভার্সিটির ড. এম হান্নান ফিরোজকে আমি নিয়ে যাই। মাহফুজ ভাইকে নিতে বলেছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা নিজে। এই সফরে আরও ছিলেন কাজী জাফর উল্লাহ, সাবের হোসেন চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আলাহ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও নজীব আহমেদ। সোহেল তাজের সঙ্গে ছিলেন তার বিদেশিনী স্ত্রী ও সন্তানরা। ভীষণ ফুটফুটে বাচ্চাদের কোলে নিয়ে আদর করতেন শেখ হাসিনা। বার বার ওদের ডেকে নিতেন। বাচ্চাগুলোও শেখ হাসিনার কোলে উঠে আর নামতে চাইত না। দিল্লির হোটেল ইমপেরিয়াল, আজমিরে খাজাবাবার মাজার জিয়ারত, জয়পুর সার্কিট হাউসে সোহেলের প্রতি শেখ হাসিনার গভীর স্নেহ-মমত্ব দেখেছি। এই স্নেহের প্রকাশেই ২০০৯ সালে সোহেল তাজ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হন। শেখ হাসিনা তাকে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি করে মন্ত্রী করেন। সোহেল তাজ কেন মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন? এর জন্য আমি নিয়তিকে দায়ী মনে করি। এ সময় বিএনপির সাবেক এক প্রতিমন্ত্রী বিদেশ যেতে বাধাগ্রস্ত হন বিমানবন্দরে। শুধু সেই সাবেক প্রতিমন্ত্রী নন, তখন কমবেশি বিএনপির সবাই বাধাগ্রস্ত হতেন বিমানবন্দরে। এ ঘটনাকে ঘিরে একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে সোহেল তাজের বাদানুবাদ হয়।

ওই নেতা ছিলেন বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে। সোহেল তাজ বার বার বলছিলেন, সন্দেহজনক অবস্থান থেকে সেই নেতাকে বিদেশ যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে। কিন্তু সংকটের সমাধান হয়নি। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হয়। নিজের আত্মমর্যাদা রক্ষা করতে সোহেল তাজ মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। মন্ত্রিত্ব ছাড়া অন্যায় কিছু নয়। আমরা সবাই বেঁচে থাকি আত্মমর্যাদার জন্য। সোহেল তাজ তার মর্যাদাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এই জগৎ-সংসারে এখন সবাই চাটুকার হতে চায়। কেউ আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে চায় না। সোহেল তাজ কোথায় একটা পারিবারিক আভিজাত্য নিয়ে বড় হয়েছেন। তার বাবা তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। বাস্তবায়ন করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব দিকনির্দেশনা। বঙ্গবন্ধু উত্তাল মার্চে তাজউদ্দীনকে যত নির্দেশ দিয়েছেন সবই মুজিবনগর সরকার চার জাতীয় নেতার নেতৃত্বে বাস্তবায়ন করেছে। সেই ইতিহাস ভুলে গেলে হবে না। বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যার পর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন ’৭৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। তিনি সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন। সেই সময় জোহরা তাজউদ্দীন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, পরে যুক্ত হয়ে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগ কর্মীদের উদ্দীপ্ত করেন। সেই ইতিহাস থেকে সোহেল তাজ আলাদা কেউ নন। তিনি তাজউদ্দীন আহমদের রক্ত ধারণ করেন। সেই কথা ভুলে গেলে চলবে না।

সোহেল তাজ অভিমানী অবস্থান নেওয়ার পর তাকে আবারও আওয়ামী লীগে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। শেখ হাসিনা এখনো সোহেলকে স্নেহ করেন। সর্বশেষ নির্বাচনের আগেও বলেছিলেন আবার ভোট করতে। ভোট সোহেল করেননি। করেছেন তার বোন রিমি। সোহেল সর্বশেষ ভোটের আগে এসে নৌকার পক্ষে কাজ করেন। প্রচারণায় অংশ নেন। সোহেলকে নিয়ে একদিন রাতে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) তাজুল ইসলামের বাসায় আমি সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে অনেক প্রশ্ন করেছিলাম। আমি তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম সোহেল তাজ কি ফিরে আসবেন? জবাবে তিনি বলেছিলেন, আমাদের চার পরিবারের সঙ্গে জাতির জনকের পরিবারের সম্পর্কটা রক্তের। কোনো খারাপ সময়ে আমাদের পিতাদের মতো আমরাও জীবন দেব। সোহেল তাজের বয়স কম কিন্তু আওয়ামী লীগে কোনো খারাপ সময় দেখলে সবার আগে তাকে শেখ হাসিনার পাশে দেখবেন। পাবেন। কোনো সন্দেহ সংশয় রাখবেন না। সৈয়দ আশরাফ আজ জীবিত নেই। সোহেল তাজ আলোচনায় এলেন তার ভাগ্নের অপহরণকে ঘিরে। হঠাৎ করে তিনি ঝড় তুললেন ভাগ্নেকে উদ্ধার করতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে। পরে তিনি লাইভে আসেন। এখন প্রশ্ন আসে, তিনি কেন লাইভে গেলেন? বাংলাদেশে সোহেল তাজ অসহায় কেউ নন। তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে পারতেন। তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দরজা খোলা এ কথা সবাই জানেন। তার পরও সোহেল তাজ কেন তা করেননি সেই প্রশ্নের জবাব আমার কাছে নেই। তবে আবেগে হোক আর বাস্তবতার ভিন্ন কারণে হোক তিনি মানুষের সামনে কথা বলেছেন। মানুষের সামনে কথা বলা, অসংগতির প্রতিবাদ জানানো অন্যায় নয়। খারাপ কিছু নয়। একজন মানুষ নিজের আত্মমর্যাদার জন্য রাজনীতি থেকে দূরে সরে আছেন। থাকতেই পারেন। তাই বলে কি তিনি কোনো অন্যায়-অসংগতির বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবেন না? বিশ্বাস করি, আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার সব মানুষের রয়েছে।

এমনকি দুঃসময়ে নিজের আত্মীয়-পরিজনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ারও অধিকার রয়েছে। প্রতিবাদ ও আত্মমর্যাদার রাজনীতি এ জাতিকে শিখিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর কোনো অনুসারী সেই অবস্থান বুকে লালন করে কথা বললে বিশাল কোনো প্রলয় নেমে আসবে না দেশে। ইতিহাস বলে, তাজউদ্দীন আহমদকে সরে যেতে হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ক্যাবিনেট থেকে। সেই তাজউদ্দীনই ৩ নভেম্বর অন্ধকার কারাগারে আদর্শের জন্য জীবন দিয়েছিলেন। সাথী হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর। ইতিহাসের হিসাব-নিকাশে এখনো সোহেলের জন্য শেখ হাসিনার দরজা খোলা। বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগের যে কোনো খারাপ সময়ে শেখ হাসিনার পাশেই থাকবেন সোহেল। সাদা চোখে এ নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু আমি দেখি না।

লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।
সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন