বর্তমানে দেশে খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে ফরমালিন ব্যবহার একটি আতঙ্ক বলে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে ফরমালিন ব্যবহারের গুজব ছড়িয়ে প্রতিবছর ধ্বংস করা হচ্ছে লাখ লাখ মেট্রিক টন ফলমূল ও সবজি। এতে করে ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহনে বর্তমানে ভোক্তাদের মাঝে এক ধরনের ভীতিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু জনমনের এ ধারণা, সেটি সত্যি নয়। ফলমূল ও শাকসবজিতে সংরক্ষণ কিংবা টাটকা ও সতেজ রাখতে ফরমালিন কোনোই প্রভাব ফেলে না। কেবলমাত্র প্রোটিন জাতীয় খাবার সংরক্ষণে ফরমালিনের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরী অনুষদীয় ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘ডায়নামিক্স অফ হ্যাজার্ড ইন ফুড চেইন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন গবেষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি আরও বলেন, খাদ্য ভেজাল আইন প্রয়োগের চেয়ে আমাদের সচেতনতা বেশি জরুরী। দেশের সাধারণ মানুষ এখনও সঠিকভাবে জানে না খাদ্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ আসলেই আমাদের স্বাস্থ্য ক্ষতি করছে কি না বা কতটুকু ক্ষতি করছে। খাদ্য দ্রব্যের উপর রাসায়নিক পদার্থের প্রভাব জানার জন্য আমরা বেশ কিছু গবেষণা করেছি। গবেষণার ফলাফল থেকে আমরা জানতে পারি, ফলমূল ও শাকসবজিতে নির্দিষ্ট পরিমানে ছত্রাকনাশক কেমিক্যাল ব্যবহারে স্বাস্থ্যের কোনোই ক্ষতি করে না। এছাড়াও ফলমূল পাকানোর জন্য যে (কার্বাইড) রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় তা নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্যবহারে স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে তা সর্বাধিক ০.০৬ পিপিএম পরিমাণ পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।
কর্মশালায় ফুড টেকনোলোজি ও গ্রামীন শিল্প বিভাগের প্রধান ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরী অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. খান মো. হাসানুজ্জামান। বিশেষ আতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মিয়ার উদ্দিন এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মাহফুজুল হক। কর্মশালাটির সঞ্চালনা করেন রাদিহা সুলতানা। এছাড়াও কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।