এই মাত্র পাওয়া কাতার বিশ্বকাপে স্টেডিয়াম তৈরী করতে গিয়ে প্রান হারালো ১৪০০ প্রবাসী!

আগামী ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজনের দায়িত্ব কাতারের কাধে। ২০২২ সালের এই বিশ্বকাপ হবে মধ্যপ্রাচ্যে আয়োজিত প্রথম বিশ্বকাপ। কিন্তু এই বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে গিয়ে অন্তত ১৪০০ নেপালি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

সৌদির রাষ্ট্রীয় দৈনিক আরব নিউজ এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে নেপালের শ্রম মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নারায়ণ রেগমিকে উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে, ‘এটা একটা সত্য ঘটনা যে, গত কয়েক বছরে কাতারে অনেক নেপালি শ্রমিক তাদের জীবন হারিয়েছে।’

জার্মানভিত্তিক পাবলিক ব্রডকাস্টার ওয়েস্টডাশ্চার রান্ডফাঙ্ক কোল (ওয়াইডিআর) তাদের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরে দেশটিতে বেশকিছু স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ চলাকালীন ১৪০০ নেপালির প্রাণহানি ঘটে।

ওয়েস্টডাশ্চার রান্ডফাঙ্ক কোল তাদের তথ্যচিত্রভিত্তিক ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের শিরোনাম দিয়েছে ‘ট্র্যাপড ইন কাতার’ অর্থাৎ কাতারের ফাঁদ।

ওয়াইডিআ সম্প্রতি এই প্রতিবেদনটি সম্প্রচার করেছে। তাতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে নির্মাণাধীন ভবনগুলোর ভেতরেই ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন শ্রমিকরা। তাদের নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম ব্যবস্থাও গ্রহণ করেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ।

এদিকে প্রতিবেদন নেপাল সরকারের দেয়া হিসাবের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ ও নিম্নমানের জীবনযাপনের কারণে প্রতি বছর দেশটির প্রায় ১১০ জন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে সেখানে। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ওয়াইডিআরকে বলেছে, তারা কাতার সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও পায়নি।

কাতার কর্তৃপক্ষের দাবি ২০২২ সালের বিশ্বকাপটি হবে ইতিহাসের সবচেয়ে জাকজমকপূর্ণ এবং সবচেয়ে দামি বিশ্বকাপ। কাতারের স্টেডিয়ামগুলোর দৌরাত্ম্য দেখলে আপনার তাই মনে হতে পারে। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম হবে সর্বনিম্ন আটটি আর সর্বোচ্চ ১২টি। চলুন দেখে নেয়া যাক কাতার বিশ্বকাপের কিছু স্টেডিয়াম।

কাতারে ২০২২ সালের বিশ্বকাপে গরমই হবে সবচেয়ে বড় সমস্যা। উয়েফা প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনি ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিকল্প হিসেবে স্টেডিয়ামে এয়ার কন্ডিশনিংয়ের ব্যবস্থা করার জন্য বলেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপের নিয়ম অনুযায়ী এটি বছরের মাঝামাঝিই অনুষ্ঠিত হতে পারে। কাতারে জুন-জুলাই মাসের গরমে তাপমাত্রা যেখানে পৌঁছায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর। তাই কাতার বিশ্বকাপের সাংগঠনিক পরিষদের জনসংযোগ ও প্রচার বিভাগের পরিচালক নাসের আল-খাতের ইতোমধ্যেই বার্লিনে গিয়ে একাধিক জার্মান কোম্পানির সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন সৌরশক্তিচালিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাপনা তৈরির লক্ষ্যে। সব মিলিয়ে কাতার বিশ্বকাপে প্রযুক্তি চোখে পড়ার মতো হবে।

আবার কাতার ঘোষণা করেছে যে, ২০২২ সালের বিশ্বকাপ কার্বন-নিউট্রাল হবে। ফিফাকে যে প্রোটোটাইপ স্টেডিয়ামটি দেখানো হয়েছে, সেটিও ছিল সৌরশক্তি চালিত। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামগুলো তৈরি হওয়ার আগে আরও সক্ষম, আরও কার্যকরী প্রযুক্তির বিকাশ দেখতে চায়। পরিকল্পনা হলো, হয় একটি কেন্দ্রীয় ‘সৌরশক্তির খামার’ তৈরি করে সেখান থেকে জ্বালানি শক্তি সরবরাহ করা, নয়তো যে ১২টি নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করা হবে, তাদের প্রত্যেকটিতে আলাদা ইউনিট বসানো।