সহিহ-সুদ্ধভাবে কাজা নামাজ আদায়ের সঠিক নিয়ম

ভুলবশত কিংবা অন্য কোনো বিশেষ কারণে কোনো ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে না পারলে এই নামাজ পরবর্তীতে আদায় করাকে কাজা নামাজ বলা হয়। ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে তার কাজা আদায় করা আবশ্যক। এশার নামাজের সময় বিতিরসহ যেকোনো ওয়াজিব নামাজের কাজা করা ওয়াজিব। নফল নামাজ শুরু করার পর ওয়াজিব হয়ে যায়। কোনো কারণে নফল নামাজ নষ্ট হলে অথবা শুরু করার পর কোনো কারণে যদি ছেড়ে দিতে হয়, তাহলে তার কাজা করাও ওয়াজিব। সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং নফলের কাজা নেই। তবে ফজরের নামাজ সুন্নত-ফরজ উভয়টা পড়তে না পারলে সুন্নত-ফরজ একসঙ্গে কাজা করা উত্তম। দুপুরের চার রাকাত সুন্নত আদায় করতে না পারলে ফরজের পরও আদায় করা যায়। ফরজের পর যে দুই রাকাত সুন্নাত আছে তার আগেও আদায় করা যায় এবং পরেও আদায় করা যায়। তবে দুপুরের ওয়াক্ত চলে গেলে কাজা ওয়াজিব হবে না।

জুমা নামাজের কাজা নেই : জুমা নামাজের কাজা নেই। জুমা পড়তে না পারলে চার রাকাত জোহার কাজা পড়তে হবে।

কাজা নামাজের সময় : কাজা নামাজ পড়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। যখনই স্মরণ হবে এবং সুযোগ হবে পড়ে নিতে হবে। তবে নিষিদ্ধ সময়গুলোতে মনে পড়লে অপেক্ষা করতে হবে।

দীর্ঘ কাজা হলে : কারও যদি কয়েক মাস এবং বছর নামাজ কাজা হয়ে যায়, তাহলে তার উচিত কাজা নামাজ একটা অনুমাণ করে নিয়ে কাজা পড়া শুরু করা। এ অবস্থায় কাজা নামাজ আদায় নিয়ম এই যে, সে যে ওয়াক্তের কাজা আদায় করতে চাইবে সে ওয়াক্তের নাম নিয়ে বলবে যে, অমুক ওয়াক্তের সবচেয়ে প্রথম বা শেষ নামাজ আদায় করছি। যেমন- কাজা হওয়া নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজের কাজা আদায় করতে চাই। তাহলে বলবে, ফজরের সবচেয়ে প্রথম অথবা শেষ নামাজ আদায় করছি। এভাবে আদায় করবে যাতে সকল কাজা নামাজ পুরো হয়ে যায়।

ভ্রমণের সময়ের কাজা : সফরে যে নামাজ কাজা হবে তা মুকিম হয়ে আদায় করতে গেলে কসর করবে। কসর মানে চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ দুই রাকাত আদায় করা। তেমনি মুকিম অবস্থায় কাজা হলে সফরে তা পুরো পড়তে হবে। সূত্র : আল ফিকহুল মুয়াসসার

নবি ও সাহাবিদের কাজা নামাজ : এক রাতে নবিজি সা. সাহাবিদের নিয়ে সফর করছিলেন। রাত শেষে বিশ্রামের বিরতি হয়। হজরত বেলাল রা. কে ফজরের নামাজের জন্য জাগিয়ে দেয়ার দায়িত্ব দিলেন। এরপর সবাই ঘুমিয়ে পড়লেন। এ দিকে হজরত বেলালও রা. ক্লান্ত। তিনিও ঘুমে আচ্ছন্ন। ফজরে কাউকে জাগাতে পারেননি। সবার ফজরের নামাজ কাজা হয়ে যায়। নবিজি সা. ঘুম থেকে জেগে সূর্য ওঠার কিছুক্ষণ পর সবাইকে নিয়ে ফজরের নামাজ কাজা করলেন। বোখারি শরিফ : ৫৯৭