আমাদের দেশে সন্তান প্রেম করছে শুনলে সাধারণতঃ বাবা-মায়েরা রেগে যান। আর কোনো কিশোর-কিশোরী যদি প্রেমে পড়ে তাহলে তো কথাই নেই! এই প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট করতে নানা চেষ্টা করেন তারা।
অবশ্য কেউ কেউ আবার ছেলেমেয়েদের এ সম্পর্ক মেনেও নেন। কিন্তু ভালবাসার মানুষটিকে সময় দিতে দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া, কিংবা একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ করে দেয়া মেনে নিতে চান না। আর বিয়ে না করে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার কথা তো ভাবতেই পারেন না কোনো বাবা-মা। বরং সন্তানের এই ভাবনা শুনলে আঁতকে উঠবেন অনেকেই।
কিন্তু জানেন কি, এমন এক গ্রাম আছে যেখানে প্রেম-যৌনতায় কোনও বাধানিষেধ নেই। বরং মা-বাবা নিজেরাই তার সন্তানকে লিভ টুগেদার করতে বলেন। এখানেই শেষ নয়, পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতে আলাদা ঘর পর্যন্ত তৈরি করে দেন তারা। কম্বোডিয়ার ক্রেয়াং প্রজাতি তাদের সমাজকে তৈরি করেছে এভাবেই।
ক্রেয়াংদের বাস কম্বোডিয়ার উত্তর-পূর্বের একটি দ্বীপ অঞ্চলে। এই গ্রাম নাকি ‘প্রেমের গ্রাম’ নামেই পরিচিত। গোটা দুনিয়ায় কী চলছে তা নিয়ে এতটুকু মাথাব্যথা নেই ক্রেয়াংদের। গ্রামে নেই বিদ্যুৎ। প্রযুক্তি তো দূরের কথা!
প্রযুক্তি ও আধুনিকতা থেকে বহু দূরে থাকা এই গ্রামের মানুষই কিনা প্রেম বা লিভ টুগেদারের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়েও বেশি অগ্রগামী। সামাজিক নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রেম করা এবং সঙ্গীর সঙ্গে লিভ ইন করার অবাধ ছাড় স্বাধীনতা রয়েছে এ গ্রামে। কেননা এটাই গ্রামের আইন।
মেয়েরা ঋতুমতী হলেই মা-বাবা তাকে সঙ্গী বাছাইয়ের স্বাধীনতা দেন। অন্যদিকে, প্রাপ্তবয়স্ক হলেই সঙ্গী খোঁজার ছাড়পত্র পান ছেলেরাও। প্রয়োজনে তারা কোনও আগুপিছু না ভেবেই করতে পারে লিভ ইন। সেই ব্যবস্থাও করে দেন মা-বাবাই৷ যুগলের সময় কাটানোর জন্য বাবা-মাই তৈরি করে দেন ‘লাভ হাট’। ক্রেয়াংদের এই গ্রামটি জলাশয়ে ঘেরা। সেই জলাশয়ের উপরেই তৈরি করা হয় কুঁড়ে ঘর‘লাভ হাট’। যাতে তাদের সন্তান সঙ্গীর সঙ্গে নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে পারেন। বুঝে নিতে পারেন একে অপরকে।
অনেক বছর ধরে তাই গ্রামে এই নিয়ম চলছে। যাতে প্রেমিক-প্রেমিকাকে কেউ বিরক্ত করতে না পারে বা অস্বস্তিতে না পড়ে, সেদিকে নজর রাখে তাদের বাবা-মাই। বিয়ে এই গ্রামে প্রচলিত নয়। প্রেমিক-প্রেমিকা কয়েক মাস একে অপরকে বুঝে নেওয়ার পরই শুরু করেন লিভ ইন। সন্তানের জন্মও হয় লিভ ইন সম্পর্ক থেকেই।