এই ব্রহ্মাণ্ডে আমরা সত্যিই কি একা? উত্তর যে ‘না’, সেটা বহু আগেই প্রমাণ করেছে নাসার কেপলার মিশন। নীলাভ, পাথুরে আমাদের এ গ্রহের মতোই আরো শত শত, হয়তোবা হাজারে হাজার গ্রহ ছড়িয়ে আছে মহাকাশে। সৌরমণ্ডলের চেনা গণ্ডির বাইরে সেসব গ্রহের কোনো কোনোটা আবার পৃথিবীর থেকে বহুগুণে বড়। কোথাও কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব থাকাও বিচিত্র নয়। সৌরমণ্ডলের বাইরে প্রাণের হদিস করতে গিয়ে এমনই ১৮টি নতুন গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। যেগুলো সবই ভিন গ্রহ বা এক্সো-প্ল্যানেটস।
নাসার কেপলার মিশন আগেও বহুবার ভিন গ্রহের খোঁজ দিয়েছে। আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে মোটামুটি স্বচ্ছ ধারণাও দিয়েছে। কেপলার মিশনের সূত্র ধরে এ ১৮টি ভিন গ্রহ সম্পর্কে গবেষণা চালাচ্ছে জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট। তাদের গবেষণার কথা বিজ্ঞান পত্রিকা ‘অ্যাসট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাসট্রোফিজিক্স’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কেপলার মিশনের এত দিনের পুরনো পদ্ধতির বদলে ভিন গ্রহ খুঁজতে নতুন প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়েছে। নতুন এ কৌশলের নাম ‘ট্রানজিট লিস্ট-স্কোয়ার্স সার্ভে’। গবেষকদের দাবি, এ পদ্ধতি অনেক দ্রুত ও নিখুঁতভাবে ভিন গ্রহের খোঁজ দিতে পারে কেপলার টেলিস্কোপকে। নতুন পদ্ধতির সাহায্যে এরই মধ্যে জানা গেছে, আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে প্রায় হাজার চারেক গ্রহ ছড়িয়ে আছে। যেগুলো পাক খাচ্ছে কোনো না কোনো নক্ষত্রের চারপাশে। এ গ্রহগুলোর মধ্যে ৯৬ শতাংশের আকার পৃথিবীর চেয়ে অনেক বেশি। সদ্য খুঁজে পাওয়া ১৮টি এক্সো-প্ল্যানেটস বা ভিন গ্রহের কিছু পৃথিবীরই মতো, কিছু পৃথিবীর চেয়ে আকারে বড়।
জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অব গটিনজেন’-এর বিজ্ঞানী কাই রডেনবেক বলছেন, এই ভিন গ্রহগুলোর বেশির ভাগ পৃথিবীর মতোই পাথুরে গ্রহ বা ‘রকি প্ল্যানেট’। আবহাওয়াতেও আছে মিল। আবার কিছু আকারে ছোট, যেগুলোর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কোনো ক্ষেত্রে ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ৫০০টি গ্রহ, বামন গ্রহ ও উপগ্রহের সন্ধান মিলেছে, যেগুলোর সঙ্গে পৃথিবীর নানা মিল পাওয়া যায়। সূত্র : দ্য ওয়াল।