প্রতিটি মানুষেরই আশা থাকে এক খণ্ড জমির মালিক হওয়া। কিন্তু আশা পূরণ করতে গিয়ে মানুষ অনেক সময় এত বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে, কোনটি সঠিক কিংবা কোনটি ভুল তা বুঝে উঠার সময় থাকে না। এ ছাড়াও জমি কেনা-বেচায় অসাধু চক্র, টাউট-বাটপার ও দালালরা তো তো আছেই। বিশেষ করে রাজধানী, বিভাগীয় শহর, উপশহর, শহরতলী এলাকার জমি কেনার ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা অনেক বেশি থাকে।
জমি কেনার আগে যা জানা জরুরি
জমি ক্রয় করতে যেসব বিষয় অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে তাহলো জরিপের মাধ্যমে প্রণিত রেকর্ড। খতিয়ান ও নকশা যাচাই করে নিতে হবে। জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর ও উক্ত দাগে জমির মোট পরিমাণ দেখে নিতে হবে।
জমি কেনার আগে উক্ত জমির সিএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ড; আরএস রেকর্ড এবং মাঠ পর্চাগুলি ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
বিক্রেতা যদি জমিটির মালিক ক্রয়সূত্রে হয়ে থাকেন তাহলে তার কেনার দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে যিনি বেচবেন তার মালিকানা সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।
জমির বিক্রিকারী উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়ে থাকলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ানে তার নাম আছে কিনা তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি সর্বশেষ খতিয়ানে বিক্রেতার নাম না থাকে তাহলে তিনি যার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়েছেন তা মূল মালিকের সংঙ্গে বিক্রেতার নামের যোগসূত্র কিংবা রক্তের সম্পর্ক আছে কিনা বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হবে।
আইনজ্ঞরা আরও বলছেন, যদি মাঠ পর্চার মন্তব্য কলামে কিছু লেখা থাকে যেমন (AD) তাহলে বুঝতে হবে উক্ত খতিয়ানের বিরুদ্ধে সত্যায়ন বা শুদ্ধতার পর্যায়ে আপত্তি রয়েছে, সেক্ষেত্রে জমি ক্রয়ের আগে জরিপ অফিসে জমিটির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিতে হবে।
তবে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রিকারীর শরিকদের সঙ্গে জমি বিক্রিকারীর সম্পত্তি ভাগাভাগির বণ্টননামা বা ফারায়েজ দেখে নিতে হবে।
জমি বিক্রিকারীর নিকট থেকে সংগৃহীত দলিল, বায়না দলিল, খতিয়ান, মাঠ পর্চা ইত্যাদি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে তলবকারী বা স্বত্বলিপি রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে।
জমি কেনার ক্ষেত্রে যিনি জমি কিনবেন তাকে মনে রাখতে হবে যে ১৯১৩ সালের সরকারি পাওনা/দাবি আদায় আইনের ৭ ধারায় বলা আছে সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয়যোগ্য নয়।
এ ছাড়া জমি কেনার আগে কী কী বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন সে বিষয়ে প্রিয়.কমের পাঠকদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রোকেয়া আখতার।