সৈয়দ আশরাফের ব্যক্তি জীবন

রাজনীতি ঘণিষ্ঠ পরিবারে জন্ম তার। পারিবারিকভাবেই রাজনীতিতে হাতখড়ি। জীবনের যেটুকু অর্জন, আর যতোটা খ্যাতি সবই এসেছে রাজনীতি থেকে। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বিদেশ-বিভুঁইয়ে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন রাজনীতি তার পিছু ছাড়েনি। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শেষ নিঃশাস ত্যাগের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত।

জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ফুসফুসে ক্যানসার আক্রান্ত এই রাজনীতিক চিকিৎসার জন্য দেশের বাইলে অবস্থান করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে নৌকায় প্রাথী হয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা যেদিন একাদশ সংসদের সদস্য শপথ নেন, সেদিনই তিনি চলে গেলেন অন্যভুবনে।

ব্যাংকক সময় বৃহস্পতিবার (০৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় সেখানকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই রাজনীতিকের জীবনাবসান ঘটে। ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ে দীর্ঘ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তার দুই বোন ও ভাই তার শয্যাপাশে ছিলেন।

শনিবার তার মরদেহ দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র।

ব্যক্তি জীবন

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বাংলাদেশের মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। একাত্তরের এই মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতার পর পারিবারিক ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ আশরাফুল ব্রিটিশ ভারতীয় শিলা ঠাকুরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শিলা লন্ডনে শিক্ষকতা করতেন এবং ২৩ অক্টোবর ২০১৭ সালে তিনি মৃত্যুবরন করেছেন। তাদের একটি মেয়ে রয়েছে (রীমা ঠাকুর), যে লন্ডনের এইচএসবিসি ব্যাংকে চাকরি করেন।

সৈয়দ আশরাফুলের স্ত্রী ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর মারা যান। এরপর থেকে তিনি প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। পরে তার ফুসফুসের ক্যান্সার ধরা পড়ে। নভেম্বর ২০১৮ সালে তার ফুসফুসের ক্যানসার ৪র্থ ধাপে আসে। ৩ জানুয়ারি থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।