সংসদ নির্বাচনে আটকে গেল চাঁদযাত্রা

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৬ আসনে (বাঘা-চারঘাট) ধানের শীষের প্রার্থী আবু সাইদ চাঁদের নির্বাচনী যাত্রা আবার থমকে গেছে। গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তার প্রার্থিতা স্থগিত ঘোষণা করে। ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনী দৌড়ে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

সূত্রমতে, চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবু সাইদ চাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে প্রথমে জেলা রিটার্নিং অফিসার চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় চাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এর পর নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। পরে নির্বাচনী মাঠে প্রচারের একপর্যায়ে আবারও তার প্রার্থিতা স্থগিত করলেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।

এদিকে চাঁদের প্রার্থিতা স্থগিতের খবর নিশ্চিতের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঘা-চারঘাট এলাকায় সরজমিন দেখা যায়, স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের সমর্থকরা হতাশা ও দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েন। সন্ধ্যার পর পরই তারা গা-ঢাকা দেন। বন্ধ হয়ে যায় ধানের শীষের প্রচার। এ সময় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও বাঘা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক জাহাঙ্গির আলম ছাড়া কেউ কল রিসিভ করেননি। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে নির্বাচনের মাঝপথে এসে একজন যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে ছিটকে দেওয়ার অপচেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে কাউকে হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাহাঙ্গির আলম। তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট আমাদের প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত ঘোষণা করেছে, তবে তা রিট করার সুযোগ রয়েছে। মনোনয়ন ফিরে পাওয়ার জন্য আমাদের আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। আমরা এখনো আশাবাদী। আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তার পরও আমি মনে করি, যত জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন চলুক না কেন, ধানের শীষের অবস্থান ভালো আছে, ভালো থাকবে এবং আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব এবং জয়ী হব ইনশাআল্লাহ।

প্রার্থিতা বাতিলের খবরের পর এলাকার প্রবীণ কয়েকজন ভোটার তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, শেষ পর্যন্ত আবু সাইদ চাঁদ একাদশ সংসদ নির্বাচনে যদি ভোট করতে না পারেন, তা হলে এই আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী পর পর দুইবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সহজেই নির্বাচিত হয়ে যাবেন। কারণ চাঁদের প্রার্থিতা বাতিলের পর আসনটিতে বিএনপির অন্য কেউ যদি ধানের শীষ মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগও পান, তবু তারা মাত্র এই কয়েক দিনে ধানের শীষের পক্ষে ভোট ধরে রাখতে বা বৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হবেন।

সর্বশেষ এ আসনে শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বর্তমানে যারা নির্বাচনী দৌড়ে মাঠে টিকে রইলেন, তারা হলেন হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুস সালাম সুরুজ ও লাঙল প্রতীকে জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন।

সূত্র: আমাদের সময়