ব্রেকিং! ভোট বানচালে আ. লীগের ২০ নেতাকে হত্যার ছক!

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে গতকাল শুক্রবার পুলিশ ১৫১ জনকে আটক করেছে। তাদের বেশির ভাগই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। আটক ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ বলছে, মূলত দুটি উদ্দেশ্য নিয়ে তারা গোপনে বৈঠক করছিল।

প্রথমত, বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের উসকে দিয়ে তারা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে চায়। দ্বিতীয়ত, নারায়ণগঞ্জে ক্ষমতাসীন দলের ২০ নেতাকে হত্যা করে ভোট বানচালের পরিকল্পনাও আছে তাদের। আর এসব পরিকল্পনার অগ্রভাগে জামায়াত থাকলেও পেছনে আছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা।

১৫১ জনের মধ্যে ১০৩ জনকে আটক করা হয় দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। এর মধ্যে ফতুল্লার ‘পাগলা হাই স্কুল’ থেকে আটক করা হয় স্থানীয় জামায়াতের রোকন ইয়াসিন মাস্টারসহ ৪৯ জনকে। পাঁচ নারীসহ ৫৪ জনকে আটক করা হয় মাসদাইর ইসলামিয়া আদর্শ ফাজিল মাদরাসা থেকে। এ সময় ককটেলসহ বেশ কিছু উগ্রপন্থী বইপত্রও জব্দ করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

এ ছাড়া গতকাল সদর মডেল থানার পুলিশ ১৩ জন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ আটজন এবং বন্দর থানার পুলিশ ২৭ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে অনেকেই নিরপরাধ বলে দাবি করেছে আটক ব্যক্তিদের স্বজনরা। পুলিশ জানিয়েছে, নিরপরাধ ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। তদন্তের পর আটক ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হবে।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের জানান, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যাদের আটক করা হয়েছে, তারা ‘জিনিয়াস বৃত্তি পরীক্ষা’র নামে গোপন বৈঠক করছিল। ওসি বলেন, ‘এই পরীক্ষা শুধু নারায়ণগঞ্জেই হয়। মোল্লা সল্টের মালিক ও জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক খবির উদ্দিন মোল্লা এ প্রকল্পের চেয়ারম্যান। পরীক্ষাটি ছাত্রশিবির আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর আড়ালে বৈঠক করে জামায়াত-শিবির মূলত দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়।’

ওসি বলেন, ‘আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, নির্বাচন বানচাল করতে জামায়াত-বিএনপির নেতারা নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) ও নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। তাঁদের প্রথম টার্গেট ছিল পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তাঁদের পরিকল্পনা ছিল বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে শ্রমিকদের উসকে দিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করা এবং নির্বাচন বানচাল করা।’ ওসি জানান, বৈঠকে বিএনপির একাধিক নেতাও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁরা পালাতে সক্ষম হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির ভয়ংকর ‘টার্গেট’ নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের মূল টার্গেট সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের (নারায়ণগঞ্জ-৪) আসনটি। নাশকতাকারীরা জেলা আওয়ামী লীগের প্রায় ২০ নেতাকে হত্যার টার্গেট করেছে। নির্বাচনের দিন ভয়ংকর কিছু ঘটিয়ে তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। পরিকল্পনায় মূল শক্তি জোগাচ্ছেন জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা। এরই মধ্যে তাঁদের নামও পাওয়া গেছে।

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান সম্প্রতি অভিযোগ করেন, ‘নারায়ণগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা প্রবেশ করছে। তাদের থাকার জন্য বালিশ-তোশক বানানো হয়েছে।’ এ নিয়ে তিনি প্রশাসন এবং নারায়ণগঞ্জবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন।–কালেরকন্ঠ