মায়ের মৃত্যুশোক নিয়েই ভোটের মাঠে মনোরঞ্জন শীল

একদিকে সন্তান হিসেবে মৃত মায়ের শেষকৃত্য, অন্যদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এমন অবস্থায় মা নাকি দেশ-দল কোনটি প্রাধান্য দেবেন, তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপাল।

তবে দুই দায়িত্বের কোনোটাকেই তিনি হেলাফেলা করেননি; বরং মায়ের মুখাগ্নি করে দেশ-দলের প্রয়োজনে শেষকৃত্যানুষ্ঠানের কাপড় পরেই তিনি নেমেছেন ভোটের মাঠে প্রচারে।

স্থানীয়রা জানান, মনোরঞ্জন শীল গোপালের মা নিত্যরানী শীল বার্ধক্যজনিত কারণে গত শনিবার মারা যান। হিন্দুধর্মীয় বিধান অনুযায়ী নিত্যরানী শীলের শেষকৃত্যে তার মুখাগ্নি করেন একমাত্র ছেলে মনোরঞ্জন শীল। ফলে শ্রাদ্ধা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছেলে হিসেবে মায়ের সব কাজ তাকেই সম্পন্ন করতে হচ্ছে।

হিন্দু বিধান অনুযায়ী, এ সময় টানা ১১ দিন মৃতের সন্তানকে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরতে হয় এবং নিজেই নিজের খাবার রান্না করে খেতে হয়। মনোরঞ্জনও এর বাইরে যাননি। তবে মায়ের শোকে কাতর হয়ে পড়লেও দেশ ও দলের প্রতি নিজের দায়িত্বের কথাও মনোরঞ্জন ভোলেননি। তাই তো নির্বাচনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পরনে সেলাইবিহীন কাপড় আর হাতে কুশ-আসন নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন তিনি।

মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, মাকে হারানো আর দেশের এক বিশেষ মুহূর্ত, দুটোই কঠিন সময়। মাকে হারিয়েছি কিন্তু জনগণের ভালোবাসা হারাতে চাই না। দেশ ভালো থাকলে জনগণ ভালো থাকবে। আর জনগণকে ভালো রাখতে পারলে আমার মায়ের আত্মাও শান্তি পাবে।

তাই জনগণকে ভালো রাখার জন্য এই কঠিন মুহূর্তেও দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমি মায়ের শেষকর্মের পাশাপাশি নির্বাচনের কাজ করে যাচ্ছি। যদিও নির্বাচনের মাঠে যতটা সময় দেওয়া দরকার, তা হয়তো পুরোপুরি দিতে পারছি না মায়ের শেষকর্মাদি সম্পন্নের জন্য। তাই আমার বিশ্বাস জনগণ এ অবস্থার কথা বিবেচনা করবে।

তিনি আরও বলেন, মা হারানোর শোক তো প্রতিটি সন্তানের জন্য সবচেয়ে কষ্টের। আমার ক্ষেত্রেও তা-ই। তার পরও জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশ রক্ষায় আমার ওপর দিনাজপুর-১ আসনের যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালনেই মা হারানোর শোক বুকে চেপে দেশ রক্ষার সংগ্রামে নেমেছি।