বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, ভয়াবহ একটা নির্বাচনের দিকে আমরা এগিয়ে চলেছি। বাংলাদেশ ধীরে ধীরে একটি প্রহসনের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির ওপর অনেক চাপ ছিল আমরা যেনো এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করি। তবুও জনগণের স্বার্থে এবং এই স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন যে সম্ভব না তা প্রমাণের জন্যই আমরা নির্বাচনে গিয়েছি আন্দোলনের অংশ হিসেবে।
বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
হাফিজ বলেন, ‘আমি ভোলা-৩ আসনের একজন প্রার্থী, এ এলাকা থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। বাংলাদেশের সব চেয়ে সহিংসতার আখড়া হলো ভোলা-৩ আসন। তিন শত আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খুন, হত্যা, জখম, নির্বাচনী সহিংসতা এখানে হয়। কিন্তু যারা এ সকল ঘটনা ঘটায় তারা এতোই কৌশলী যে এসব ঘটনা পত্রপত্রিকায় আসে না। যারা এসব ঘটনার সাথে যুক্ত, যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নাই, সরকার থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, বরং আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৯ তারিখের পর উন্মুক্ত হবে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা। কিন্তু আমাদের সকল নেতাকর্মী তাদের এলাকায় যেতে পারছে না। মিথ্যা মামলার হয়রানির কারণে। আমরা সিইসিকে বিষয়টি জানানোর পরও কোনো প্রতিকার পাইনি।’
হাফিজ বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে সিইসিকে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো ট্রান্সফার চলবে না। প্রতিটি নির্বাচনের আগে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ক্যাম্পেইন চলে, কিন্তু এবার তার নাম গন্ধ নেই। তফসিল ঘোষণার আগে বৈধ অস্ত্রধারীদের অস্ত্র জমা দিতে হয়, এবার তার কোনো উদ্যাগ নেই। কারণ আওয়ামী লীগে যত সন্ত্রাসী বাহিনী আছে তাদের বৈধ অস্ত্র দিয়েছে বর্তমান সরকার। এই অস্ত্র ব্যবহার করা হবে বিএনপি এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কী ধরনের নির্বাচনে যাচ্ছি, আমাদের কর্মীবৃন্দ নেতৃবৃন্দের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এই ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা এখন পূর্ব বিবেচনা করার সময় এসেছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে আমরা অনেক কর্মী হারাব। অনেকের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, অনেকে আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে থাকবেন। ভয়াবহ একটা নির্বাচনের দিকে আমরা এগিয়ে চলেছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে সকল দাবি-দাওয়া দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার একটিও মানা হয়নি। তারপরও আমরা কেনো নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তা সকল নেতাকর্মীর কাছে চিন্তার বিষয়। মিডিয়ার কাছে আসা রাখব, আপনারা বৈষম্যহীনভাবে কাজ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।