পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর-নাজিরপুর-স্বরূপকাঠী) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমরণ কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামিম সাঈদীকে মেনে নিতে নারাজ নাজিরপুর উপজেলা বিএনপি। গতকাল সোমবার উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় নেতাকর্মীরা একথা জানান।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ সহযোগী ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেয়।
সভায় নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সাঈদী পুত্র শামীম সাঈদীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে আমাদের নিশ্চিত ভরাডুবি হবে। কেননা এখানে তার কোনো ভোট নাই। তা ছাড়া তার বাড়ি পিরোজপুর-২ নির্বাচনী এলাকার জেলার ইন্দুরকানি উপজেলায়। সেখানে প্রশাসনের চাপের মুখে মাঠে কাজ করতে পারবে না দলের নেতাকর্মীরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিতে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী রয়েছেন। সমালোচনার উর্ধ্বে থাকা প্রার্থী হলে আমাদের জন্য ভালো হয়। সাঈদীর ছেলে রাজাকার পুত্র হিসেবে সমলোচিত হওয়ায় নির্বাচনী মাঠে আমাদের সমস্যা হবে। এ কথা আমরা রেজুলেশনের মাধ্যমে কেন্দ্রেও অবহিত করেছি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাঈদীর বাড়ি পিরোজপুর-২ আসনে ও জেলার ইন্দুরকানী উপজেলায়। তাই সেখানে তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও তারা মহাজোট প্রার্থীর কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে এ আসনের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসেছে। আমি তার পক্ষে কাজ করতে রাজি না। ’
এ সময় উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন মোল্লা, দীর্ঘা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. খায়রুল কবির, মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম হাসান রুনু, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. হাফিজুর রহমান লায়েক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা সাঈদীর ছেলেকে জোটের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হলে দলীয় কাজ থেকে বিরত থাকার কথা জানান। তবে তাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ও দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে বক্তব্য রাখেন অনেকে। তারা হলেন- উপজেলা বিএনপির কনিষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম লাহেল মাহমুদ, সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আছাদুজ্জামান শিকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. মহর আলী মৃধা, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. মাজেদুল কবির রাসেল, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে এইচ এম লাহেল মাহমুদ জানান, ‘যেহেতু আসন্ন নির্বাচনটি দেশমাতা খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নির্বাচন, তাই কেন্দ্র যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করাই দলের একজন ঈমানদার কর্মীর কাজ বলে আমি মনে করি।’–আমাদের সময়