একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০ রাজধানীর বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় এই বৈঠক শুরু হয়।বৈঠকে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মো. মনছুর, মোস্তফা মহসিন মন্টু, জগলুল হায়দার আফিক, সুব্রত চৌধুরী, আব্দুল মালেক রতনসহ প্রমুখ উপস্থিত আছেন।এদিকে গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়াইয়ের জন্য ১২৪টি আসনে মনোনয়ন চিঠি ইস্যু করেছে বিএনপি। এতে প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন ২০৯ জন।পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বিভাগের নেতাদের ধানের শীষ প্রতীকের টিকিট ইস্যু করা হয়। বেশিরভাগ আসনে একাধিক প্রার্থী রেখে চিঠি দেয়া হচ্ছে।
এতে বেশিরভাগই পুরনো মুখগুলোকে দেখা গেছে।আরো পড়ুন- আসনে খালেদা জিয়া, সংবাদ সম্মেলনে কাঁদলেন ফখরুল, একই আসনে একাধিক প্রার্থী, গোপন চিঠি হাতে হাতেকৌশলী মনোনয়ন ঘোষণা করেছে বিএনপি। শরিকদের জন্য পর্যাপ্ত আসন রেখে গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছু আসনের এবং আলাদাভাবে কিছু আসনের প্রার্থীদের কাছে মনোনয়নপত্র হস্তান্তর করেন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে অনেকে নিজের এলাকায় টেলিফোন করে নেতা-কর্মীদের কাছে মনোনয়নপত্র গ্রহণের কথা জানান। আজ আরও কিছু আসনে প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়নপত্র তুলে দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে পুরো মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় বিশেষ কৌশলী অবস্থান বজায় রেখেছে বিএনপি।
একদিকে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তিনটি আসনে মনোনয়নের কথা জানানো হলেও গোপনে সেখানেও আলাদা প্রার্থী রাখছে দলটি। বেগম খালেদা জিয়া কোনোভাবে নির্বাচনে অংশ না নিতে পারলে এসব প্রার্থী সামনে চলে আসবেন। এর বাইরে বেশকিছু আসনে দুই বা ততোধিক প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছে মনোনয়ন। এর আগে গতকাল বিকালে মনোনয়ন ঘোষণা প্রক্রিয়ার একেবারে শুরুতে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারান্তরিন থাকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিএনপি মহাসচিব। সেখানে উপস্থিত নেতা-কর্মীরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আজকে যখন আমি আপনাদের সামনে এসেছি, অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে, এই প্রথম আমরা একটা নির্বাচনে অংশ নিতে চলেছি আমাদের চেয়ারপারসনকে ছাড়া।’
কান্না চাপতে না পেরে একপর্যায়ে তিনি টিভি ক্যামেরা বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেন এবং পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ মোছেন। পরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) কারাগারে। সরকারের প্রচণ্ড প্রতিহিংসামূলক মামলা ও কলাকৌশলে তাকে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা দেশনেত্রীর মনোনয়নপত্র তার প্রতিনিধিদের কাছে তুলে দিয়ে এ কার্যক্রমের সূচনা করছি।’এমন পরিস্থিতিতেই বগুড়া-৬, ৭ ও ফেনী-১ আসনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা ঘোষণার মাধ্যমে মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করা হলো। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপির যেসব প্রার্থী গতকাল পর্যন্ত মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন নিচে তাদের নাম দেওয়া হলো। তবে গতকাল রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিএনপির মনোনয়নপত্র বিতরণ চলছিল।
রংপুর বিভাগ : পঞ্চগড়-১ ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, পঞ্চগড়-২ ফরহাদ হোসেন আজাদ/ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, ঠাকুরগাঁও-১ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঠাকুরগাঁও-৩ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জয়পুরহাট-১ ফয়সাল আলীম/ফজলুর রহমান, জয়পুরহাট-২ আবু ইউসুফ খলিলুর রহমান/গোলাম মোস্তফা, দিনাজপুর-১ মঞ্জুরুল ইসলাম/মামুনুর রশিদ, দিনাজপুর-২ সাদিক রিয়াজ পিনাক/বজলুর রশিদ, দিনাজপুর-৩ সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম/ডা. মাজহারুল ইসলাম দোলন, দিনাজপুর-৪ হাফিজুর রহমান সরকার/আক্তারুজ্জামান মিয়া, দিনাজপুর-৫ রেজোয়ানুল হক ও জাকারিয়া বাচ্চু, দিনাজপুর-৬ লুত্ফর রহমান/শাহিন, রংপুর-১ মোকারম হোসেন সুজন, রংপুর-২ ওয়াহেদুজ্জামান মামুন/মোহাম্মদ আলী, রংপুর-৩ রিটা রহমান/মোজাফফর আহমেদ,
রংপুর-৪ এমদাদুল হক ভরসা, রংপুর-৫ সোলাইমান আলম/ডা. মমতাজ, রংপুর-৬ সাইফুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ খন্দকার জিয়াউল ইসলাম/মোজাহারুল ইসলাম, গাইবান্ধা-২ মাহমুদুন্নবী টিটুল/আহাদ আহমেদ, গাইবান্ধা-৩ ডা. মইনুল হাসান সাদিক, গাইবান্ধা-৪ ওবায়দুল হক/ফারুক আলম, গাইবান্ধা-৫ হাছান আলী/ফারুক কবীর, কুড়িগ্রাম-১ সাইফুর রহমান রানা/শামীম, কুড়িগ্রাম-২ সোহেল ও আবু বকর সিদ্দিক, কুড়িগ্রাম-৩ তাজভীরুল ইসলাম/আবদুল খালেক, কুড়িগ্রাম-৪ মোখলেছুর রহমান/আজিজুর রহমান, লালমনিরহাট-৩ আসাদুল হাবিব দুলু।রাজশাহী বিভাগ : বগুড়া-৬ বেগম খালেদা জিয়া, বগড়া-৭ বেগম খালেদা জিয়া, রাজশাহী-১ ব্যারিস্টার আমিনুল হক, রাজশাহী-২ মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী-৩ মতিউর রহমান মন্টু, রাজশাহী-৪ শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী-৫ আবু হেনা/আবদুল গফুর, রাজশাহী-৬ নাদিম মোস্তফা/নজরুল মণ্ডল,
রাজশাহী-৭ আবু সাঈদ চান, সিরাজগঞ্জ-১ কনকচাঁপা, সিরাজগঞ্জ-২ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু/রোমানা মাহমুদ, সিরাজগঞ্জ-৩ আবদুল মান্নান তালুকদার, সিরাজগঞ্জ-৫ আমিরুল ইসলাম খান আলীম, সিরাজগঞ্জ-৬ ড. এম এ মোহিত, নাটোর-১ তাইফুল ইসলাম টিপু/অধ্যক্ষ কামরুন নাহার শিরীন, নাটোর-২ রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, পাবনা-৫ মোহাম্মদ শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, নওগাঁ-১ সাদেক চৌধুরী/মোস্তাফিজুর রহমান, নওগাঁ-২ শামসুজ্জোহা/খাজা নাজিবুল্লাহ, নওগাঁ-৩ রবিউল আলম বুলেট/আরেফিন সিদ্দিকী, নওগাঁ-৪ শামসুল আলম প্রামাণিক/ডা. ইকরামুল বারী টিপু, নওগাঁ-৫ জাহিদুল ইসলাম ধলু/নাজমুল হক সনি, নওগাঁ-৬ আলমগীর কবীর/রেজাউল ইসলাম রেজু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ শাহজাহান মিয়া/বেলাল বাকী ঈদ্রিসী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আনোয়ারুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আবদুল ওয়াদুদ/হারুনুর রশিদ।
বরিশাল বিভাগ : বরিশাল-১ জহিরউদ্দিন স্বপন/আবদুস সোবাহান, বরিশাল-২ সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল/সরদার শরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু/শহীদুল হক জামাল, বরিশাল-৩ অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন/বেগম সেলিমা রহমান, বরিশাল-৪ রাজীব আহসান/মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, বরিশাল-৫ মজিবর রহমান সরোয়ার/এবায়দুল হক চাঁন, বরিশাল-৬ আবুল হোসেন খান, ঝালকাঠি-১ ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, ঝালকাঠি-২ রফিকুল ইসলাম জামাল/ইসরাত জাহান ইলেন ভুট্টো/জেবা খান, পিরোজপুর-৩ রুহুল আমিন দুলাল/শাহজাহান মিয়া, বরগুনা-১ মতিউর রহমান তালুকদার/নজরুল ইসলাম মোল্লা,
বরগুনা-২ অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম মণি, পটুয়াখালী-১ এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, পটুয়াখালী-২ সুরাইয়া আক্তার চৌধুরী/শহিদুল আলম তালুকদার/সালমা আলম তালুকদার, পটুয়াখালী-৩ গোলাম মওলা রনি/হাসান মামুন/ মোহাম্মদ শাহজাহান খান, পটুয়াখালী-৪ এ বি এম মোশাররফ হোসেন/মনিরুজ্জামান মনির, ভোলা-২ হাফিজ ইব্রাহিম/রফিকুল ইসলাম, ভোলা-৩ মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ/কামাল হোসেন, ভোলা-৪ নাজিমউদ্দিন আলম/নূরুল ইসলাম নয়ন।চট্টগ্রাম : ফেনী-১ বেগম খালেদা জিয়া, ফেনী-২ জয়নাল আবেদীন ভিপি, ফেনী-৩ আবদুল আউয়াল মিন্টু, নোয়াখালী-১ ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী-২ জয়নুল আবদিন ফারুক,
নোয়াখালী-৩ মো. শাহজাহান, নোয়াখালী-৪ বরকত উল্লা বুলু, নোয়াখালী-৫ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নোয়াখালী-৬ ফজলুল আজিম, লক্ষ্মীপুর-২ আবুল খায়ের ভুইয়া, লক্ষ্মীপুর-৩ শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, লক্ষ্মীপুর-৪ আশরাফ উদ্দিন নিজান।ঢাকা বিভাগ : ঢাকা-২ : আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা ৩ গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা-৪ সালাউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা-৫ নবীউল্লাহ নবী, ঢাকা-৬ আবুল বাশার, ঢাকা-৮ মির্জা আব্বাস, ঢাকা-৯ হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ঢাকা-১৩ আবদুস সালাম, নরসিংদী-১ খায়রুল কবীর, নরসিংদী-৩ সানাউল্লাহ মিয়া।সিলেট বিভাগ : সিলেট-২ তাহসিনা রুশদীর লুনা।খুলনা বিভাগ : ঝিনাইদহ-১ আসাদুজ্জামান আসাদ/আবদুল ওহাব, ঝিনাইদহ-২ অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ/এস এম মশিউর রহমান, ঝিনাইদহ-৩ মেহেদী হাসান রনি/মনির খান, ঝিনাইদহ-৪ সাইফুল ইসলাম ফিরোজ/শহিদুজ্জামান বেল্টু।
উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন