জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে গণফোরামের কার্যালয় থেকে তিনি দলের সদস্য ফরম সংগ্রহ করেন। গণফোরামের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক বাংলাদেশ জার্নালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সোমবার বিকেলে প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে তার যোগদানের কথা রয়েছে। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘বিকেলে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও পাবনার আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাইয়িদ ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেবেন।’
আবু সাইয়িদ ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তথ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১/১১’র পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন আওয়ামী লীগের সাবেক এই তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক।
অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই নির্বাচনে শামসুল হক টুকুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের টিকেট নিয়ে তার নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচন করতে পারেন। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে তার নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে।
আবু সাইয়িদ ১৯৭০ সালে তৎকালীন পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য ছিলেন। ১৯৭২ সালে গঠিত ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পাবনা জেলার গভর্নর নিযুক্ত হন। তিনি সামরিক শাসকের একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন। ২০১৩ সালে আবু সাইয়িদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তার পিএইচডি গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইন্ডিপেন্ডেন্স অব বাংলাদেশ: এ ডিপ্লোমেটিক ওয়ার’।
গত কয়েকদিনে আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া, সাবেক জেনারেল (অব.) আনসা আমিন ও একুশে টেলিভিশনের সাবেক মালিক আবদুস সালাম গণফোরামে যোগ দিয়েছেন।
এছাড়া, আরো ২০ থেকে ২৫ ‘হেভিওয়েট প্রার্থী’র গণফোরামে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তারা গণফোরামে এলে আসন বন্টন নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই প্রভাব শরিক দলের অন্যদের চেয়ে বিএনপির ওপরই বেশি। কারণ, জোটের বৃহত্তম দল হিসেবে বিএনপিই জোটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসনের দাবিদার। গণফোরামে ‘হেভিওয়েট প্রার্থী’দের উপস্থিতি বাড়লে শেষ পর্যন্ত বিএনপিকেই বেশি আসন ছাড়তে হবে। আর ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগির প্রক্রিয়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি।–বিডিজারনাল