কপাল পুড়তে পারে মমতাজের

হরিরামপুর, সিঙ্গাইর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে মানিকগঞ্জ-২ আসন ও জাতীয় সংসদের ১৭৩ নম্বর আসনটি গঠিত। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার আলোচনায় থাকা জাতীয় পার্টি আসনটিতে এবার ছাড় চাইছে। সেই সাথে এখানে নজর থাকবে যুক্তফ্রন্টেরও। এমতাবস্থায় বর্তমান এমপি বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের নির্বাচনে নবগঠিত সংসদীয় এলাকায় বিএনপি দলীয় প্রার্থী হন মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতা। তাকে পরাজিত করে ৯ম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ১৪ দলীয় জোট সরকারের প্রার্থী জাতীয় পার্টির নেতা এস এম আব্দুল মান্নান। এবারও সেই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জের এই আসনটি লক্ষ্য থাকবে জাতীয় পার্টির।

এদিকে এ আসন থকে লড়তে চান সদ্য বিকল্পধারায় যোগ দেওয়া জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জাতীয় পার্টির আমলের শিক্ষা উপমন্ত্রী ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ী গোলাম সারোয়ার মিলন। তিনি এই আসন থেকে এমপি হওয়ার আশায় যুক্তফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার ঠিক আগমুহূর্তে যুক্তফ্রন্টে যোগ দিয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছেন।

রাজনৈতিক মহলে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এসএম আব্দুল মান্নান ও যুক্তফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক গোলাম সারোয়ার মিলনকে নিয়ে দারুণ সমালোচনা চলছে। অনেকের ধারণা, আওয়ামী লীগ এই আসনটি তাদের মিত্রদল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেবে। কিন্তু বর্তমান এমপি মমতাজ বেগম তার নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নমূলক অনেক কাজ করেছেন। তাছাড়া তিনি দেশবরেণ্য ফোক শিল্পী।

সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ভিপি শহিদুর রহমান শহিদ জানান, বর্তমান এমপি এলাকায় রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন করেছেন। তৃণমূলের সঙ্গে তার নেটওয়ার্ক। মমতাজের বিকল্প এই আসনে কেউ হতে পারে না।

জানা গেছে, বর্তমান এমপি সিংগাইর উপজেলা আওযামী লীগের সভাপতি মমতাজ বেগম। ২০০৮ সালে প্রথমে সংরক্ষিত আসনে, দ্বিতীয় বার ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি এমপি হন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন বর্তমান এমপি মমতাজ বেগমসহ সাতজন।

তারা হলেন- সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল। তিনি একবার এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে হেরেছিলেন।

বিজিএমইর সাবেক পরিচালক ঢাকা মহানগর (উত্তর) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য গোলাম মিনর হোসেন, হাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী মনির হোসেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহিউদ্দিন ও সাবেক সংসদ সদস্য সামসুদ্দিন আহম্মেদ।

এদিকে জাপার একাধিক সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এই আসনটি জাপাকে ছেড়ে দিয়েছিল। তখন বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থীকে জাপা প্রার্থী এসএম আব্দুল মান্নান বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। সেই আশায় এবারও জাপা এ আসনকে টার্গেট করেছে। জাপার নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, ২০০৮ সালের মতো এবারও আওয়ামী লীগ জাপাকে এ আসন ছেড়ে দেবে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম আব্দুর মান্নানের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি জেলা জাপা সভাপতিও। তিনি বিত্তশালীও। সংগঠক হিসেবে তার সুপরিচিতি রয়েছে।

জেলা জাপার সহ-সভাপতি ও হরিরামপুর উপজেলা জাপার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান, তাদের এই সিটের ব্যাপারে ইতিমধ্যে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে গেছেন। তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দিকে জোর দিচ্ছেন।