গুঞ্জন খোলাসা করছেন না সামাদপুত্র ডন

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন এবার ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করতে পারেন বলে এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ডন স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না। ‘দেখা যাক’ বলে চমক রেখে দিলেন সামনের জন্য।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন আবদুস সামাদ আজাদ ২০০৫ সালে মারা যাওয়ার পর ডন সেখানে বাবার জায়গা নেয়ার চেষ্টা শুরু করেন। ২০০৮ এবং ২০১৪ সালেও তিনি সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেখানে প্রার্থী করে বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানকে।
এবারও ডন মনোনয়নের দাবিতে সোচ্চার আর স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ আছে তার সঙ্গেই। যদিও এবারও মান্নানকেই প্রার্থী করা হচ্ছে বলে খবর ছড়িয়েছে এলাকায়। আর এই খবরে সামাদপুত্রকে নিয়ে তৈরি হয় গুঞ্জন।
এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এস এম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া গণফোরামে যোগ দিয়েছেন। আর এই দলটি এখন বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ এবং তারা ধানের শীষে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আর ডন নৌকা পাচ্ছেন না বলে প্রচার শুরুর পর থেকেই প্রশ্ন উঠে তিনিও কিন ঐক্যফ্রন্টের কোনো শরিক দলে যাচ্ছেন।
ডনের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি ‘হ্যাঁ’ও করেননি, আবার ‘না’ও করেননি। বলেন, ‘সময়ই সবকিছু বলে দেবে। আমি আমার নেত্রীর প্রতি বিশ্বাসী আমি আমার যোগ্য মর্যাদা এবার পাব।’

একই প্রশ্ন আবার করলে সামাদপুত্র বনে, ‘সাধারণ মানুষের চাপ বাড়ছে। সবার চাপে ইলেকশন করতে হতে পারে।’
এমনকি দলীয় মনোনয়ন না পেলেও? ডন বলেন, ‘আসলে এই মুহূর্তে এ বিষয়ে আমি কিছু ভাবছি না। সে সিদ্ধান্ত পারিবারিকভাবে ও নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণ করব।’
নিজের মনোনয়নের দাবির বিষয়ে সামাদপুত্র বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি এলাকায় কাজ করছি, দলকে সুসংগঠিত করেছি; মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে আমি কখনোই কিছু করিনি। আমার কর্মকা- মূল্যায়ন করে দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে বলে আমি বিশ্বাসী।’
ডনের ঘনিষ্ঠজন জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, ডনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া না হলে ২৭ নভেম্বর বসে তারা করণীয় ঠিক করবেন।

একজন নেতা বলেন, ‘আমরা চাই যে কোনো প্ল্যাটফর্ম থেকেই হোক, ডন সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে এবার নির্বাচন করুন। তিনি নির্বাচন করলে জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের হাল ধরেন আবদুস সামাদ আজাদ। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন।
২০০১ সালে সারাদেশে দলের বিপর্যয়ের মধ্যেও সুনামগঞ্জ-৩ দুর্গ অক্ষুণœ রাখেন সামাদ। ২০০৫ সালে তার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনেই প্রার্থী হতে চান ডন। তবে তাকে না দেয়ার পর হেরে যায় আওয়ামী লীগ। জিতে যান বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের প্রার্থী শাহীনূর পাশা চৌধুরীকে।
তবে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে শাহীনুরের দ্বিগুণ ভোট পেয়ে জেতেন সাবেক যুগ্ন সচিব এমএ মান্নান। ধানের শীষ প্রতীকে শাহীনুর পান ৫৬ হাজার ৪৭১ ভোট; আর নৌকা নিয়ে মান্নান পান এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৬৬ ভোট।
২০১৪ সালেও মান্নানকে প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ। আর সরকার গঠনের পর তাকে করা হয় অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী।