কোকোর স্ত্রী শর্মিলাকে বিএনপি নেতার কুপ্রস্তাব!

কোকোর স্ত্রী শর্মিলাকে- দুর্নীতি মামলায় কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ প্রয়াত আরাফত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর শেষ করে লন্ডনে ফিরে গেছেন। লন্ডনে ফিরে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের কাছে বিএনপি ভাঙ্গার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

লন্ডনের এক স্থানীয় বিএনপি নেতার সঙ্গে তার দহরম মহরম থাকলেও বাংলাদেশ থেকে যাওয়া সিলেটের অপর এক বিএনপি নেতার কুনজরে পরেছেন তিনি। এবার ঢাকা থেকে ফেরার পথে বিমানে তার সঙ্গে ছিলেন এই নেতা।

তিনি শর্মিলাকে কুপ্রস্তাব দেয়ার পর, এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে তারেক রহমান ওই নেতাকে তলব করলেও দেখা করেননি বলে জানা গেছে।

শর্মিলা রহমান গত ১৬ আগস্ট তার বন্দী শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে ঢাকায় আসেন। কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে পরপর দুইবার সাক্ষাৎ করেন তিনি। সংক্ষিপ্ত সফরে খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

সে সময় বৈঠকের ধরণ দেখে ধারণা করা হচ্ছিলো, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি দলের অভ্যন্তরীণ বিশেষ দিকগুলোতে নজর দেওয়ার জন্যই তারেক রহমানের বিশেষ দূত হিসেবে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি গোপন করতে তিনি তার অসুস্থ মায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানিয়েছিলেন গণমাধ্যমকে।

লন্ডন বিএনপির একটি বিশেষ সূত্রে জানা যায়, লন্ডনে ফিরে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দলের অভ্যন্তরীণ মনোভাব সম্পর্কে সামক্য বার্তা দিয়েছেন।

এতে শর্মিলা রহমান উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলের অস্থিতিশীলতা নিয়ে। যতই দিন যাচ্ছে বিএনপিতে হতাশা এবং বিভক্তি বাড়ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপিতে বড় ধরণের ভাঙনের আশঙ্কা করেছেন বেগম জিয়ার পুত্রবধূ।

সূত্র আরও জানায়, সিঁথির মতে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের মধ্যে যতটা জনপ্রিয়, তার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় দলের বাইরে। আর তা খুব সম্প্রতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

এছাড়া নির্বাচনের ব্যাপারে তার অবস্থান স্পষ্ট নয় বলেও তিনি জানিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সরকারের ভালো যোগাযোগ রয়েছে বলেও তার ধারণা।–ভোরের পাতা

ধমক দিয়ে আইনজীবীদের যা বললেন খালেদা জিয়া

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে শুক্রবার সন্ধ্যায় কারান্তরীণ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তাঁর আইনজীবীরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনসহ অনেক আইনজীবীই উপস্থিত ছিলেন ওই সাক্ষাতে।

বেগম জিয়া আইনজীবীদের কাছে জানতে চান তিনি আদালত বর্জন করলে কী হবে? উত্তরে আইনজীবীরা বলেন, তিনি আদালত বর্জন করলে কোর্ট একতরফা ভাবে বিচার করতে পারে।

জিয়া অরফানেজ দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের জন্য দণ্ডিত হয়ে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারান্তরীণ আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া। বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাও চলছে। কিন্তু কারাগারে থেকে অসুস্থতাকে কারণ দেখিয়ে আদালতে উপস্থিত হচ্ছিলেন না বেগম জিয়া।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা সম্পন্ন করার স্বার্থে পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই আদালত স্থাপনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞান অনুযায়ীই গত ৫ সেপ্টেম্বর কারাগারে আদালত বসে, যেখানে উপস্থিত হয়ে বেগম জিয়ার আর আদালতে আসবেন না বলে জানান।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছে আদালত। এর মধ্যেই শুক্রবার আইনজীবীরা দেখা করলেন বেগম জিয়ার সঙ্গে। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে বিএনপি রিট করতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছিল।

জানা গেছে, সাক্ষাতের এক পর্যায়ে বেগম জিয়া কারাগারে আদালত বসানোর বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করাতে বলেন আইনজীবীদের। তখন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বেগম জিয়াকে বলেন, হাইকোর্টে রিট করে কোনো লাভ হবে না। সরকার এমন আদালত বসাতে পারে, আইন অনুযায়ীই সরকারের সেই ক্ষমতা আছে।

এ সময় খালেদা জিয়া অত্যন্ত রেগে যান। ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিনসহ আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে ধমক দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা তো সরকারের মতো করে কথা বলছেন। সরকার বোধয় আপনাদের পারচেজ (কিনে) নিয়েছে।

‘জানি না আর ক্ষমতায় আসতে পারবো কি না’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কৃষিবিদদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সামনে নির্বাচন জানি না আবার ক্ষমতায় আসতে পারবো কি না। যদি আসি তো ভালো। আর যদি না আসতে পারি আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ দেশের উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখবেন। খাদ্যের জন্য আর যেন ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ না হতে হয়।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে খাদ্য সংকট হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আপনাদের সবচেয়ে বেশি। কারণ কৃষি শক্তিশালী হবে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।

শনিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ আয়োজিত ৬ষ্ঠ জাতীয় কনভেনশন-২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এ এম এম সালেহ।

সকাল ১০টা ১ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। মূলমঞ্চে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের পতাকা উত্তোলন করেন কৃষিবিদ এ এম এম সালেহ।

এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দিবসটির শুভসূচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মঞ্চে বসা সকলকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। কৃষির উন্নয়নের ওপর একটি প্রামাণচিত্র পরিবেশন করা হয়।

দুদিনব্যাপী আয়োজিত এ কনভেনশন উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উম্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খায়রুল আলম প্রিন্স।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর কৃষি গবেষণায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। কম জমিতে কীভাবে বেশি ফসল করতে হবে তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। লবণাক্ত জমিতে, খরার সময় এবং জলমগ্ন জমিতে ধানচাষ করার জন্য আলাদা আলাদা ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে।

যে কারণে দেশের চারিদিকে সমানভাবে ধান উৎপাদন হচ্ছে। ফলে তৃণমূলের মানুষ অর্থনৈতিক সুফল পাচ্ছে। একটি বাড়ি একটি খামারের মধ্যদিয়ে তৃণমূলের মানুষকে আমরা স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছি। তাদের বলা হয়েছে এক ইঞ্চি জায়গা যেন খালি পড়ে না থাকে।

তিনি বলেন, কৃষকদের উৎপাদন সহযোগিতার জন্য মাত্র ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট করার সুযোগ দিয়েছি। ফলে সরকারের দেয়া ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে।

কৃষিঋণ কৃষকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। সার নিয়ে অার কোনো লুকোচুরি নেই। অথচ এই সারের জন্য বিএনপি সরকার ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে। সেচের দাবিতে মিছিল করতে গিয়ে অনেক কৃষককে প্রাণ দিতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে শত বছর পরে আমরা বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চাই সেভাবে পরিকল্পনা করছি। এ জন্য ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা জয় করেছি।

এই সমুদ্রসীমায় শুধু খনিজ নয়, মৎস্যসম্পদ যেন ভাণ্ডারে পরিণত হয় সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কৃষির সার্বিক উন্নয়নের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।