ক্ষেতলালে মাল্টা চাষ

বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছেন ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ কৃষক এস এম রওশন জামিল। তিনি নিজস্ব উদ্যোগে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামুক্ত উঁচু জমিতে উন্নত জাতের বিদেশি ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা ফল চাষ শুরু করছেন। ইতোমধ্যে তার শ্রম, সততা আর ঘামের প্রতিফলন সুরভিত হয়ে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে তার বাগান থেকে কাঙ্ক্ষিত মাল্টা ফল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি জন্য সংগ্রহ করা হবে।
সরজমিন ও ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই সদর থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে ভাসিলা-পুরানো গোপীনাথপুর রাস্তার দক্ষিণ পার্শ্বে সমন্তাহার গ্রাম। সেই গ্রামের আদর্শ কৃষক এস এম রওশন জামিল ‘মনোয়ারা রজিব এগ্রো ফার্ম’ নামে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামুক্ত উঁচু জমির উপর বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা ফল চাষ শুরু করেছেন। এই ফল বাগানে গত ২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসে প্রায় ৬০০টি ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা গাছ রোপণ করেন।
তার শ্রমে প্রতিফলন সুরভিত হয়ে বর্তমান কাঙ্ক্ষিত মাল্টা ফলগুলো গাছে গাছে বাতাসে বাতাসে দুলছে এবং ফলগুলো ফুট প্যাকিং শুরু হয়েছে। আর আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত বিদেশি জাতের মাল্টা ফল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি জন্য সংগ্রহ করা হবে। তবে বর্তমান তিনি কলম করে মাল্টা ফলের চারা বিক্রি করছেন। তার কলমের মাল্টা ফলের প্রতিটি চারা প্রায় ৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তার এই মাল্টা ফলের বাগান এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রশাষন, রাজনীতিবিদ, কৃষক, বৃক্ষপ্রেমি, ফল চাষী ও বাগান মালিকেরা আসেন। জামিলের ওই দৃষ্টি নন্দীত মাল্টা ফলের বাগান এখন সবার মুখে মুখে।

ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ মাল্টা ফল চাষি এস এম রওশন জামিল বলেন, উত্তরবঙ্গে সর্ববৃহৎ এবং জয়পুরহাট জেলার এই প্রথম আমি ১ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ লাখ টাকার ব্যয়ে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বিদেশি ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা ফলের বাগান বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছি। আমার এই মাল্টা ফল বিষ ও ফরমালিনমুক্তসহ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও টাটকা ফলগুলো নিজ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা যাবে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত বিদেশি জাতের মাল্টা ফলগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি জন্য সংগ্রহ করা হবে। আশা রাখি এই মাল্টা ফলগুলো প্রায় ৬ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এই বাগানে প্রতিদিন ৫ জন কর্মচারী কাজ করেন। আমার এই মাল্টা ফলের বাগান এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
এই বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর কবির বলেন, এই এলাকার কৃষকেরা ধান ও আলুর চাষ করতে বেশি অগ্রহী হয়। এসব চাষাবাদ ছাড়াও অনেক ধরনে ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে আধিক লাভবান হওয়া যায়। সেই চেষ্টাই আমরা জামিলের মাল্টা ফলের বাগানের মাধ্যমে এলাকায় একটি আধুনিক ফলবাগান সৃষ্টি করেছি। এটা আমরা যা চেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি সফল হয়েছি। তিনি আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হবেন।